বাংলাদেশ, , শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

মহাকবি নবিন চন্দ্রসেনের জন্ম উৎস পালিত

  প্রকাশ : ২০১৯-০২-১০ ২১:৩১:৩৭  

মহাকবি নবিন চন্দ্রসেনের জন্ম উৎসবে বক্তারা রক্তে অর্জিত মাতৃভাষা বাংলাকে ক্ষত বিক্ষত করবেন না

পরিস্হিতি২৪ডটকম : চট্টল গৌরব মহাকবি নবিন চন্দ্রসেনের ১৭২ তম জন্ম বার্ষিকীর আলোচনা সভা ও কবিতা পাঠের আসর ১০ ফেব্রুয়ারি বিকালে শহীদ মিনার সংলগ্ন মিলনায়তনে চট্টগ্রাম ইতিহাস চর্চা কেন্দ্রের আয়োজনে ইতিহাসবিদ সোহেল মো. ফখরুদ-দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্টিত হয়। আলোচনায় অংশ নেন অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইউনুস কুতুবী, স্বাগত চৌধুরী, হাসান আবদুল্লাহ,কবি শাহনুর আলম, কবি লিটন চৌধুরী, এস এম ওসমান, প্রফুল্লা চৌধুরী, নজরুল ইসলাম, বাবু দুলাল বড়ুয়া, মো. মনিরুল ইসলাম, হেনা দাশ, বাবুল বড়ুয়া, অধ্যাপক দিদারুল আলম প্রমুখ। জন্ম উৎসবে বক্তারা বলেছেন, মহাকবি নবিন চন্দ্রসেন মাতৃভাষা বাংলার জন্য কলমযুদ্ধে অংশ নেন। বৃটিশ বিরোধী কর্ম কান্ডপরিচালনার জন্য তিনি বৃটিশদের চোখের কাটা হন, নির্যাতিতও হন। বক্তারা বলেছেন, মাতৃভাষা বাংলা আজ পদে পদে আক্রান্ত। ভাষা শহীদদের রক্তে অর্জিত মাতৃভাষা বাংলা আজ তবিত। বাংলা ভাষাকে আধুনিকতার নামে খিচুরী বানিয়ে ফেলছে। নয় বাংলা, নয় ইংরেজি বলতে বলতে আজ এই ভাষার বির্পয দেখা দিয়েছে। পবিত্র বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষা করতে কবি সাহিত্যিকদের এগিয়ে আসতে হবে। কবি নবিন চন্দ্রসেনের জন্ম উৎসবে ইতিহাস গবেষক সোহেল মো.ফখরুদ-দীনের লিখিত প্রবন্ধে বলেন, “উনিশ শতকে বাংলা সাহিত্যের উল্লেখযোগ্য কবি, মহাকবি খ্যাত নবীনচন্দ্র সেন। দেশপ্রেমিক কবি হিসেবেই খ্যাত ছিলেন নবীনচন্দ্র সেন। পলাশীর যুদ্ধের কবিরূপে ঊনিশ শতকের নবজাগরণের কবি নবীনচন্দ্র সেকালে বাংলাসাহিত্যে সর্বাধিক পরিচিত ও জনপ্রিয় হয়ে উঠলেও তাঁকে আমরা এখন প্রায় ভুলতে বসেছি। ‘পলাশীর যুদ্ধ’ প্রকাশের সাথে সাথে চট্টলার খ্যাতিমান এই কবির এই কাব্যগ্রন্থ নিয়ে ‘বঙ্গদর্শন’, ‘বান্ধব’ ও ‘আর্যদর্শন’ এই তিন সাময়িক পত্রিকায় উল্লেখযোগ্য আলোচনা হয়। ছাত্রজীবন থেকেই নবীনচন্দ্র সেন কবিতা রচনা শুরু করেন। প্যারীচরণ সরকার সম্পাদিত এডুকেশন গেজেটে তাঁর প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘অবকাশরঞ্জিনী’ প্রকাশিত হয় ১৮৭১ সালে। ১৮৭৫ সালে ‘পলাশীর যুদ্ধ’ মহাকাব্য প্রকাশিত হলে নবীনচন্দ্র ব্রিটিশ সরকারের রোষানলে পড়েন। তিনি ভগবতগীতা ও চন্ডি’র কাব্যানুবাদ করেন। স্বজাতিবোধ ও স্বদেশানুরাগ তাঁর কাব্যের মৌলিক অবদান। বস্তুত একজন দরদী স্বভাবকবি ছিলেন নবীন চন্দ্র। ১২৭৮ সালে তাঁর ‘অবকাশরঞ্জিনী’ প্রকাশিত হয়। কবি সুকৌশলে আপন-জীবনের দুঃখের কাহিনী বয়ান করেন এই কাব্যে। পলাশীর যুদ্ধ কাব্য প্রকাশিত হলে তিনি যে একজন প্রতিষ্ঠিত সফল লেখক, তা সবাই বুঝতে পারেন। অতঃপর কবি নবীনচন্দ্র সেন ক্রমান্বয়ে রঙ্গমতী, রৈবতক, কুরুত্রে, প্রভাস, অমিতাভ, অমৃতাভ প্রভৃতি কাব্য প্রণয়ন করেন। এ কাব্যগুলো সাধারণ পাঠক মনে যথেষ্ট প্রতিষ্ঠা লাভ করে। কর্মজীবনে মাত্র ২১ বছর বয়সে তিনি ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হন নবীনচন্দ্র সেন। সরকারি চাকরিতে নিযুক্ত থাকাকালে বহুস্থানে বহু জনহিতকর ও সংস্কারকর্মে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।চট্টগ্রামের ইতিহাসে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে ভারত কলিকাতা ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের ইতিহাসে তিনি স্মরনীয় ও বরনীয় মনীষী”। স্মরন উৎসবে বক্তারা নবিন চন্দ্রসেনের স্মৃতি সংরনের জন্য সরকারের প্রতি দাবী জানান।
প্রেসবিজ্ঞপ্তি



ফেইসবুকে আমরা