বাংলাদেশ, , শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

প্রধানমন্ত্রী একনেক সভায় প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি আনতে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন

  প্রকাশ : ২০১৯-০১-২৩ ১৬:১২:৪৩  

পরিস্হিতি২৪ডটকম : প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি আনতে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল মঙ্গলবার শেরেবাংলানগরস্থ এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ নির্দেশ দেন তিনি। নতুন সরকার গঠনের পর এটাই প্রথম একনেক সভা।

সভার শুরুতে দেওয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি চাই, যে প্রকল্পগুলো আমরা গ্রহণ করেছি, সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন শুরু করা এবং সেটা যেন যথাযথভাবে হয় সে ব্যাপারে নজরদারিও বাড়াতে হবে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর প্রথম একনেক সভার শুরুতে প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধতন কর্মকর্তাগণ। সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রকল্পগুলোর বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন পরিকল্পনা মন্ত্রী। তিনি জানান, সভায় ১ হাজার ৮৯৩ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয়ের মোট ৮টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর পুরোটাই সরকারের নিজস্ব তহবিল (জিওবি) হতে দেওয়া হবে।

সভায় গোপালগঞ্জ বিসিক শিল্পনগরী সম্প্রসারণ প্রকল্পের ৩য় সংশোধনী অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০২ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। মন্ত্রী জানান, প্রতিটি শিল্প নগরীতে বর্জ্য শোধনাগার স্থাপন করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ইটিপি ছাড়া শিল্পনগরীর কোন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হবেনা। বিসিক শিল্পনগরী যেখানে করা হোক সেখানে বর্জ ব্যবস্থার আধুনিক করতে হবে। জলাভূমি ভরাট না করারও নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

সভায় ৩৪৫ কোট টাকা ব্যয়ে পিপিআর রোগ নির্মূল এবং ক্ষুরারোগ নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ছাগল ও ভেড়ার সংক্রামক রোগ পিপিআর সারা দেশ থেকে নির্মূল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেইসাথে প্রকল্পের নির্বাচিত এলাকায় পশুর ক্ষুরা রোগ নির্মূল করা হবে। সেইসাথে ক্ষুরারোগ মুক্ত অঞ্চল সৃষ্টি করা হবে বলে জানানো হয়েছে। সভায় অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হলো ৩৫৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে বিদ্যমান ৭টি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের উন্নয়ন ও নতুন ৬টি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট স্থাপন প্রকল্প, ১৪৭ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের জাদুঘর ভবন সম্প্রসারণ এবং অন্যান্য ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প, ৩৬৮ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয়ে যাত্রাবাড়ী (মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার)-ডেমরা (সুলতানা কামাল সেতু) মহাসড়ক ৪-লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প, ২৫৭ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে নেত্রকোণা জেলার চল্লিশা (বাগড়া)-কুনিয়া-মেদনী-রাজুবাজার সংযোগ মহাসড়ক নির্মাণ প্রকল্প এবং ১১১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ে গোবিন্দগঞ্জ-ছাতক-দোয়াবাজার সড়কে বিদ্যমান ৯টি সরু ও জরাজীর্ণ সেতুর স্থলে ৯টি আরসিসি/পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ প্রকল্প।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অনুমোদনের পর থেকে যেন প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়। ভূমি অধিগ্রহণে সব সময় তিনগুণ দাম দিতে হবে। মন্ত্রী বলেন, অনেকে পিতা-মাতার স্মৃতিবিজড়িত জমি দিতে চায় না। আমরা এক টাকার জমি তিন টাকা দিয়ে অধিগ্রহণ করবো। ফলে সবাই জমি দিতে উত্সাহিত হবে।

এদিকে, মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী আর্থ-সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের বাসস্থান প্রদানের লক্ষ্যে ২০১৮ সালের ৮ই মার্চ ২ হাজার ২৭৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘প্রতি জেলা/উপজেলায় অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণ’ প্রকল্প অনুমোদ দেওয়া হয়েছিলো। প্রকল্পটি প্রত্যাহার করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। গতকাল একনেক সভায় এ সংক্রান্ত সার সংক্ষেপে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রকল্প বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে প্রতিক্রিয়া, ফ্লাটের মালিকানা, উত্তরাধিকার সংক্রান্ত জটিলতা, বহুতল ভবন এলাকায় সুবিধাভোগী মুক্তিযোদ্ধাদের কর্মসংস্থানের সুযোগের অপ্রতুলতা, ভবনগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ, লিফট বিহীন পাঁচ তলা ভবনে বয়স্ক মুক্তিযোদ্ধাদের উঠানামার অসুবিধা ইত্যাদি বিবেচনায় প্রকল্পটি প্রত্যাহারের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর পরিবর্তে ভূমিহীন ও অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের নিজ বসতভিটায় কিংবা প্রয়োজনে সরকারি খাস বন্দোবস্ত দিয়ে একতলা বিশিষ্ট বাসস্থান নির্মাণ করা যথার্থ হবে।



ফেইসবুকে আমরা