পরিস্হিতি২৪ডটকম : তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়ার অনুরোধ করে বিএনপি প্রকারান্তরে প্রধানমন্ত্রীকে প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব নিতে বলেছে, যা আইন-আদালতের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে।’
রবিবার বিকেলে এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়াম মাঠে অমর একুশে বইমেলা চট্টগ্রামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “আজকে সকালবেলা দেখলাম, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি প্রকারান্তরে এটি বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যেন প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করেন।’ এ কথা বলার মধ্য দিয়ে রিজভী আহমেদ ও বিএনপি দলগতভাবে আইন ও আদালতের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করেছেন।”
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তো তাকে (খালেদা জিয়া) শাস্তি দেয়নি। তাকে শাস্তি দিয়েছেন আদালত। তাকে মুক্ত করতে হলে তো আদালতের মাধ্যমেই করতে হবে। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়ার সেই এখতিয়ার তো প্রধানমন্ত্রীর নেই।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘রিজভী আহমেদ বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া নাকি অসুস্থ। তিনি তো আগে থেকেই অসুস্থ। আদালতে নিয়ে যাওয়ার পর খালেদা জিয়ার যে চেহারা আমরা টেলিভিশনে দেখলাম, এখানে কি আপনারা অসুস্থতার ছাপ দেখেছেন? বেগম খালেদা জিয়া ঠিক আগের মতই পরিপাটি। সানগ্লাস নিয়ে আদালতে হাজির হয়েছেন। অসুস্থতার কোনো ছাপ আমরা বেগম খালেদা জিয়ার চেহারার মধ্যে দেখতে পাইনি।’
ড. হাছান মাহমুদ আরও বলেন, “রিজভী আহমেদ আরো কিছু কথা বলেছেন, যেগুলো অশোভন। রাজনৈতিক ভব্যতা এবং শালীনতা তিনি বজায় রাখেননি। আমি রিজভী আহমেদের প্রতি অনুরোধ জানাবো, আপনাদের কি মনে আছে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছিল। তখন বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী। এবং ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় আইভী রহমানসহ আমাদের ২৪ জন নেতাকর্মী হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন। পাঁচশ’র বেশি নেতাকর্মী আহত হয়েছিলেন। আমি নিজেও সেদিন গ্রেনেড হামলায় আহত হয়েছিলাম, অনেকদিন হাসপাতালে ছিলাম। এখনো আমরা শরীরে ৪০টি স্প্রিন্টার আছে।”
এর আগে বিকেল ৫ টা ৮মিনিটে তথ্যমন্ত্রী জাতীয় পতাকা, মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন চসিকের পতাকা উত্তোলন করেন। এ সময় জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন কাপাসগোলা সিটি কর্পোরেশন কলেজের ছাত্রীরা। পরে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ফেস্টুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সহায়তায় ১৯ দিনব্যাপী এ বইমেলার আয়োজন করেছে। এতে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ১১০টি প্রকাশনা সংস্থার প্রায় দেড়শটি স্টল রয়েছে। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামশুদ্দোহা, বইমেলার আহ্বায়ক কাউন্সিলর নাজমুল হক ডিউক, বইমেলার যুগ্ম-আহ্বায়ক মহিউদ্দিন শাহ আলম নিপু, জামাল উদ্দিন, সদস্য সচিব সুমন বড়ুয়া প্রমুখ।