পরিস্হিতি২৪ডটকম : চট্টগ্রাম ওয়াসা পচিালনা বোর্ডে প্রকৃত পানি ব্যবহারকারি/ভোক্তা প্রতিনিধি অর্ন্তভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষনকারী জাতীয় প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)সহ নাগরিক সমাজের দাবির প্রেক্ষিতে গত ২৯ জুলাই মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোহাম্মদ সাঈদ-উর-রহমান স্বাক্ষরিত পত্রে এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ৩০ জুলাই চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সুপারিশে মো: সোলেমান আলম সেটকে পানি ব্যবহারকারি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। নিয়মানুযায়ি ২০১৫ সালের ১৬ জুলাই তার মেয়াদ শেষে শূণ্যপদ পূরণের নির্দেশ দেয় মন্ত্রণালয়। কিন্তু রহস্যজনক কারণে তিনি তিন বছরের স্থলে টানা সাতবছর ধরে এ পদে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
মেয়াদোত্তীর্ণ বোর্ড সদস্য বহাল থাকার বিষয়ে ক্যাবের অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় নতুন করে পৃথক দুটি আদেশ জারি করে চট্টগ্রাম ওয়াসা বোর্ড চেয়ারম্যান বরাবর। ৪৬.০০.০০০.০৮৫.১১.০৪.২০১৮-৪৬০ স্মারকের আদেশে ‘পানি ব্যবহারকারিগণের প্রতিনিধি হিসেবে চট্টগ্রাম ওয়াসা বোর্ডের সদস্য মো: সোলেমান আলম সেঠ এর মেয়াদপূর্ণ হওয়ায় পানি সরবরাহ ও পয়:নিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ আইন, ১৯৯৬ এর ৬ (১)(গ) ও ৬ (২) ধারা অনুযায়ি উক্ত পদে আগামী ৭ (সাত) কার্যদিবসের মধ্যে পানি ব্যবহারকারিগণের একজন প্রতিনিধির মনোনয়ন স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রেরণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো’। ৪৬.০০.০০০.০৮৫.১১.০৫.২০১৮-৪৬১ স্মারকের আদেশে বলা হয়, ‘চট্টগ্রাম ওয়াসা বোর্ডের পানি ব্যবহারকারিগণের সদস্য হিসেবে ভোক্তা প্রতিনিধি অনÍর্ভূক্তির জন্য কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) কর্তৃক অনুরোধ করা হয়েছে। উক্ত পত্রের ছায়ালিপি এতদসংগে প্রেরণ করা হলো। এ পত্রের বিষয়ে আগামী ৭ (সাত) কার্যদিবসের মধ্যে মতামত প্রেরণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো’।
চট্টগ্রাম ওয়াসায় দীর্ঘদিন প্রকৃত ভোক্তা প্রতিনিধি না থাকায় ভোক্তাদের সমস্যাগুলি ওয়াসা কর্তৃপক্ষে উত্থাপনের সুযোগ ছিল না। অন্যদিকে ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ধারা নং ৫ এর ১৬ উপ-ধারায় বলা আছে, কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) দেশের সর্বত্র ভোক্তাদের প্রতিনিধিত্ব করবেন। আর তারই ধারাহিকতায় ক্যাব সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ভোক্তা র্স্বাথ সংশ্লিষ্ট নীতি নির্ধারণী ও কমিটিগুলিতে প্রতিনিধিত্ব করে আসলেও চট্টগ্রাম ওয়াসায় তা মানা হয়নি। তাই চট্টগ্রাম ওয়সায় ভোক্তাদের সত্যিকারের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের উন্নয়নে সবসময় আন্তরিক এবং তাঁর কারনে চট্টগ্রাম ওয়াসার জন্য ইতিমধ্যেই বিপুল বরাদ্ধ দিয়েছেন। এই বরাদ্ধ নগরবাসীর জন্য আশীর্বাদ হওয়ার কথা থাকলেও বিভিন্ন অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও অদক্ষতায় জনভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে স্থানীয়-জাতীয় পত্র পত্রিকা ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রতিনিদিনই সংবাদ পরিবেশিত হচ্ছে। ভোক্তাদের সমস্যা ও ভোগান্তি তুলে ধরার জন্য সরকার ওয়াসা পরিচালনা পর্ষদে ভোক্তা প্রতিনিধি রাখার বিধান রাখলেও ওয়াসা বোর্ড গঠনে ভোক্তা সংরক্ষন আইন ২০০৯ অনুসরণ করা হয়নি। কারণ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে দেশের ভোক্তা প্রতিনিধি কারা হবেন তা পরিস্কার ভাবে উল্লেখ আছে। যার কারণে ভুক্তভোগীদের সমস্যা নীতি নির্ধাারনী মহলে জানানোর কোন সুযোগ ছিলোনা।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ভোক্তা প্রতিনিধি হিসাবে ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির সভাপতি কর্তৃক প্রেরিত পত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারন সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ন সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম,ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান প্রমুখ চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি