বাংলাদেশ, , বুধবার, ১ মে ২০২৪

হাকিক্কতের আলোকধারা

  প্রকাশ : ২০২০-০২-২২ ১৮:৫২:৫৮  

পরিস্হিতি২৪ডটকম/(কুতুব উদ্দিন রাজু,চট্টগ্রাম): এই পৃথিবী যতবার আঁধারে ডুবেছে, বেদনায় কেঁদেছে, বিষাদে ভেসেছে; ততবারই খোদা দয়া-মেহেরবানীর দুয়ার খুলে নূরের আলোয় রাঙ্গিয়েছেন সমস্ত ধরণীলোক। স্মৃতির দর্পণে ভেসে উঠে চৌদ্দশত বছর আগের মদিনার অলিগলি জুড়ে ছড়িয়ে থাকা স্মৃতির পাপড়িগুলো।
যাঁর কুটিরে আলো জ্বালাবার মতো কিছুই ছিলো না, তিনিই করেছেন পৃথিবীকে নূরের আলোতে আলোকময়, সৃষ্টির প্রাণে প্রাণে বাজিয়েছেন তৌহিদ বীণা, প্রেমময় সীমাহীন আল্লাহভীতির অনুরণন, অগাধ বিশ্বাসের অনুরঞ্জন, সর্বোপরি জাতে নূরের ঐশি জলোয়ার হেদায়তময় বিস্ফোরণ। অনাহারে-অর্ধাহারে চলেছেন তবুও শোকরগুজার করেছেন, তায়েফের প্রান্তরে রক্ত মোবারক ঝরিয়েছেন বিনিময়ে ক্ষমার বার্তা দিয়েছেন নির্দয় নিষ্ঠুর প্রাণে তাওয়াজ্জুহ্ প্রক্ষেপণে হেদায়তের শরাব বিলিয়েছেন। এরই ফলশ্রুতিতে বিশ্বময় আজ ইসলামের পতাকা উড়ছে, উড়বেই ইনশাআল্লাহ।
সেই পথ ধরে যুগে যুগে আশেকে ইলাহী মাহবুবে রাসূল তথা সলফে সালেহীন কদম-ব-কদম নবী (দ)’র অনুসরণে আর অনুকরণে রত ছিলেন। সভ্যতার গণজোয়ারে উত্তাল তরঙ্গে মানুষ যখন বেভুল হয়ে ছুটে চলছে আত্তপরিচয় ভুলে, তখন আমরা পেয়েছি কালজয়ী এমন এক রাহবারকে; যিনি চট্টগ্রাম জেলার রাউজান থানার কাগতিয়ার মিনার থেকে ঘোষিলেন জীবন জাগানিয়া, ঘুম ভাঙ্গানিয়া, রূহ রাঙ্গানিয়া হেদায়তময় প্রেমের ধ্বনি।
তিনি হলেন কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা, আওলাদে মোস্তফা, খলিফায়ে রাসূল (দ) হযরত শায়খ ছৈয়্যদ গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আন্হু। যাঁর জীবনের প্রতিটা কাজকে ব্যবচ্ছেদ করলে, তাঁর ব্যবহৃত বর্ণমালাকে অনুধাবন করলে, তাঁর নিরবতাকে নিভৃতে ভাবলে ফুটে উঠে তাকওয়ার গভীর উপলব্ধি, তাওয়াক্কুলের নিবিড় অনুশীলন এবং তাওয়াজ্জুহ্ প্রক্ষেপণের মাধ্যমে আত্তবিসর্জন এবং আল্লাহ ও রাসূল (দ)‘র সন্তুষ্টি অর্জনের অশ্রুময় এক উপাখ্যান।
নবীজীর মতো শৈশবে পিতামাতাকে হারিয়ে দুররে এতিম হয়েছিলেন। জীবনে কঠিন সংগ্রামে কতো শত দিনরাত না খেয়ে কাটিয়েছেন। তবুও নড়েননি খোদার পথ থেকে, সরেননি প্রিয়নবীর সুন্নাত থেকে। যাঁর জীবনের দুঃখগুলো বুঝানোর জন্য কেউ ছিলো না, অথচ তিনি হয়েছেন সকলের দুঃখের ভাগী সৃষ্টির প্রতি অনুরাগী, ভালোবাসার বিনিময়ে শ্রেষ্ঠ ত্যাগী। তাইতো তাঁর সংস্পর্শে সংশ্রবে দূর হয় জীবনের সংশয়, পেয়ে মা’রেফাত তথা প্রভুর পরিচয়। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে তোমরা মানুষকে আল্লাহর পথে ডাক হেকমত ও উত্তম নসিহত সহকারে।
কোরআনের এই ঘোষণাকে অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়ন করেছেন তাওয়াজ্জুদ এর মাধ্যমে হেকমত প্রদর্শন করে এবং এশায়াত সম্মেলন, এশায়াত মাহফিল, এশায়াত সেমিনার ও বিভিন্ন কনফারেন্সের মাধ্যমে মানবজাতিকে কোরআন-হাদিসের আলোকে আল্লাহ ও নবীজীর পথে ডেকেছেন। এই চলার পথে অশ্রু ছিল যাঁর দুই নয়নের অলঙ্কার।
শরীয়ত ও সুন্নাত পরিপন্থী কোনো কাজ করেননি, এটাই ছিল যাঁর শ্রেষ্ঠ কারামত। দুর্যোগে-দুর্দশায় নবীজীর কদম ধরে কেঁদেছেন আল্লাহর সহায়তা কামনায়। সৃষ্টির প্রতি অসীম প্রেমের আকুতি হিসেবে অবিরত দু’আ করতেন হে আল্লাহ! আমার তরিক্বতকে আরব থেকে আজমে, জ্বীন থেকে ইনসানে পৌঁছিয়ে দাও। তাঁর দু’আ আজ আল্লাহর মেহেরবানীতে প্রিয়নবীর দয়াতে বাস্তবতায় দৃশ্যমান। এ যেন তাওয়াক্কুলের শ্রেষ্ঠ উপমা।
তাই এই তরিক্বত পৌঁছে যাচ্ছে সমস্ত পৃথিবীতে তামাম সৃষ্টিতে। তৌহিদের তালিমে, নবীপ্রেমের সীমাহীন তাড়নায় একজন সাধারণ ব্যক্তি তাঁর তরিক্বতে এলে ১১১১ বার দরূদ শরীফ আদায় করেন আদব ও এখলাসের সাথে। এছাড়াও রয়েছে ফয়েজে কোরআনের মাধ্যমে নূরে কোরআন গ্রহণে কোরআনের আলোতে আলোকিত হওয়ার অপূর্ব সুযোগ, মোরাকাবার মাধ্যমে এক খোদাকে তালাশ করার অপূর্ব মাধ্যম, সর্বোপরি নবীজীর সুন্নাতকে আপাদমস্তক ধারণ করে অন্তঃকরণে গ্রহণ করে জীবনের সর্বত্র বাস্তবায়ন করার খোদায়ী শপথ।
এই বিশ্বজোড়া তরিক্বতের পয়গামকে মুসলিম উম্মাহ কাজে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ইনশাআল্লাহ আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি শনিবার ঢাকার গুলিস্থানে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঐতিহাসিক এশায়াত সম্মেলন। হে মুসলিম উম্মাহ্! এসো জড়ো হই হেদায়তের মজলিশে। খোদাপ্রেমের স্রোতধারায়, এস্কে নবীর বিহ্বলতায়, মা’রেফাতের সুতীব্র আকুলতায়, হেদায়তময় শান্তির কোমলতায়, হাকিক্বতের মায়াবী আলোকধারায়। সর্বোপরি গাউছিয়তের প্রেম নূর আহরণে সুবিশাল কর্মতৎপরতায়।



ফেইসবুকে আমরা