বাংলাদেশ, , বুধবার, ৯ অক্টোবর ২০২৪

বান্দরবানে নির্বাচনী মাঠে আওয়ামীলীগ,বিএনপি ও ইসলামী আন্দোলন প্রার্থীরা ,প্রচারনায় সরগরম মাঠ-ঘাট

  প্রকাশ : ২০১৮-১২-২৫ ১৬:৩৩:১৫  

পরিস্হিতি২৪ডটকম /(রিমন পালিত,বান্দরবান প্রতিনিধি): সামনে আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে জমে ওঠেছে বাংলাদেশের সর্বশেষ আসন পার্বত্য জেলা বান্দরবানের রাজনীতি। সমতলের চেয়ে যেমন ভিন্ন এই আঞ্চলের ভৌগলিক অবস্থা তেমনি ভিন্ন এই জেলার রাজনীতি। এরই মধ্যে এই আসন থেকে নির্বাচনে বিজয়ের লক্ষে মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন চুড়ান্ত প্রার্থীরা ।
সাতটি উপজেলা দুটি পৌরসভা আর ৩৩টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত বাংলাদেশ সংসদের ৩০০ নং সংসদীয় আসন বান্দরবান। তার মধ্য মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১৭৬ টি , মোট ভোটার ২,৪৬,৭৫৪ জন, পুরুষ ভোটার ১,২৮,১৩০ জন , মহিলা ভোটার ১,১৮,৬২৪ জন । এসব কেন্দ্রে ১৭৬ জন প্রিজাইডিং অফিসার ছাড়াও ৬০৫ জন সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার ও ১২১০ জন পোলিং অফিসার থাকবেন। একই সাথে জেলার দূর্গম ১৪টি কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম ও কর্মকর্তাদের নেয়ার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হবে।পাহাড়ী ও বাঙ্গালীসহ ১১ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টির ভোটারদের কথা মাথায় রেখে পরিচালিত হয় বান্দরবানের রাজনৌতিক দলগুলোর কার্যক্রম।
নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় সারাদেশের মত বান্দরবানে বইছে নির্বাচনী হাওয়া। এই জেলায় বিভিন্ন আঞ্চলিক দলের প্রভাব থাকলে ও সংসদীয় আসনটি ঘিরে মূল লড়াই চলছে বর্তমানে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি ও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীর মধ্যে। নির্বাচনকে সামনে রেখে তাই দলীয় বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যস্ত সময় পার করছে দলীয় নেতাকর্মীরা।
আওয়ামীলীগ প্রার্থী বীর বাহাদুর উশৈ সিং:
২৫ বছর ধরে বীর বাহাদুরের নেতৃত্বে বর্তমানে আসনটির আছে আওয়ামীলীগ দখলে। আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নেীকা প্রতীকের প্রার্থী তিনি। সাংবাদিকদের প্রশ্নে এই বিষয়ে বীর বাহাদুর বলেন, আমি কখনো প্রতিপ্রুতি দিয়ে কোনও কাজ করিনি। সব সময় যা পেরেছি তাই করেছি। প্রথমবার নির্বাচনে মশাল র্মাকা নিয়ে বিজয়ী হয়েছিলাম। তার পর থেকে সেই মশাল এখনো নিভেনি । উন্নয়নের মাধ্যমে বান্দরবানের প্রতিটি ঘরে ঘরে আলো পৌছে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কোনও কাজ করার সুযোগ পেলে আমি কখনো তা হাত ছাড়া করিনি। যখন যেখানে মসজিদ, মন্দির, ক্যাং, ব্রিজ, কালবার্ট, রাস্তাঘাটের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে তা আমি নিজ উদ্যোগেই করেছি। এসময় তিনি আগামীতে বান্দরবানকে সুন্দর করে সাজাতে কি ধরণের উন্নয়ণ করতে হবে তার জন্য সাংবাদিকদের কাছ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ নিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, আমি আগামীতে যদি আবারও মতায় আসতে পারি তবে অবশ্যই সাংবাদিকদের দেয়া সব পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করে যাবে ।
বিএনপি প্রার্থী সাচিং প্রু জেরী :
বিএনপি প্রার্থী জেরী বলেন, নির্বাচন আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে নির্বাচন প্রচারনা করছি। বিএনপি ক্ষমতা আসলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও আতœকর্মসংস্থানের উপর জোর দেয়া হবে। প্রথম স্থানীয় সরকার পরিষদ চেয়ারম্যান থাকা কালে পাহাড়ি বাঙ্গালি মিলে প্রায় ছয়শ জনকে সরকারী চাকুরী ব্যবস্থা করে দিয়েছি। সম্প্রীতি বজায় রেখেছি। বিএনপি সরকার ক্ষমতা না আসায় এবং নিজেদের দলিয় কোন্দলের কারণে উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে পারিনি। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে বান্দরবানে চলমান যে উন্নয়ন কাজ চলছে,সে কাজগুলো সংযোজন করা হবে। চলমান উন্নয়নের কাজগুলো বাজায় রেখে বান্দরবানকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে বলে তিনি জানান।
ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী মাওলানা মুফতি শওকতুল ইসলাম
এই বার বান্দরবান ৩০০ নং সংসদীয় আসন থেকে আওয়ামী লীগ বিএনপি ছাড়াও বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলন থেকে প্রার্থী হয়ে লড়ছেন মাওলানা মুফতি শওকতুল ইসলাম। এই নেতার বাড়ি বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাইতং এলাকায়। তিনি এর আগে ইউপি নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনে সংগঠনের কেন্দ্রীয় আমির হযরত মাওলানা মুফতি রেজাউল করিমের নির্দেশে ৩০০ আসনেই তারা প্রার্থী হয়েছেন । নির্বাচনে জয়ের বিষয়ে তিনি জানান সব কিছুর মালিক আল্লাহ তিনি পরম দয়ালু তিনি চাইলে সব হয় । আমি দেশের মানুষের সেবা করার লক্ষ নিয়ে সবাই দোয়া ও ভালাবাসা দিয়ে সেবার মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই আর সকলের আন্তরিক ভালবাসা ও দোয়া যদি পাশে থাকে তাহলে অবশ্যই ভোটে বিজয়ী হব । আমার ইচ্ছ দেশের সকল মানুষের সেবা করা রাজত্ব করা নয় । নবীজীগন আল্লাহর নির্দেশে দেশের মানুষের সেবা করে গেছেন আমিও আল্লাহর একজন নেক বান্দা হিসাবে দেশের মানুষের সুখে দুখে পাশে থেকে তাদের সেবা কওে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই । আর সকলে ভালবাসা পাশে থাকলে তা আমি পারবো বলে বিশ^াস করি ।
বান্দরবান ৩০০নং আসনে প্রার্থীদের শান্তিপূর্ণ প্রচারনা
বান্দরবান ৩০০নং আসনে প্রার্থীদের শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী প্রচারনা শুরু হয়েছে। সংসদ নির্বাচনেও দেখা গেছে সম্প্রীতীর ছোয়াঁ। জাতীয় সংসদ নির্বচনে ৩০০ নং বান্দরবান আসনে আ.লীগ বিএনপির মনোনীত দুই প্রার্থীর বাসা পাশাপাশি হওয়ার পরও প্রচারনার প্রথম দিনে কোন রকম ঝামেলা ছাড়াই শান্তি পূর্ণ ভাবে প্রচার কার্যক্রম শুরু করেন উভয় প্রার্থী। পাশা পাশি থেমে থাকেনি ইসলামি আন্দোলনের প্রার্থীও ।
সম্প্রীতির বান্দরবানে প্রার্থীদের এমন শান্তিপূর্ণ প্রচারনা দেখে খুশি সাধারন জনগণ। সোমবার সকালে প্রতীক পাওয়ার পরপরই প্রচারনায় নেমে যান আওয়ামীলী-বিএনপির প্রার্থীরা । আওয়ামীলীগের প্রার্থী বীর বাহাদুর থানচি উপজেলার রেমাক্রী থেকে এবং বিএনপি প্রার্থী সাচিং প্রু জেরী পৌর এলাকা থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচারনার কার্যক্রম শুরু করেন। তবে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীকে প্রচারনা একটু পরে শুরু করে। এদিকে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই পোষ্টারে পোষ্টারে ছেয়ে গেছে পুরো জেলা এবং শহর জুড়ে চলছে দুই প্রার্থীর মাইকিং। জনগণের মাঝে বিরাজ করছে নির্বাচনী উৎসবের আমেজ। সোমবার সকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সভা কে ৩ জন প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেন রিটানিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মোঃ দাউদুল ইসলাম। নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন বীর বাহাদুর উশৈসিং, ধানের শীষ পেয়েছেন বিএনপির সাচিং প্রু জেরী এবং হাত পাখা প্রতীক পেয়েছেন ইসলামী আন্দোলনের শওকতুল ইসলাম।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রেজাউল করিম
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান,জেলার দূর্গম ১৪টি কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম ও কর্মকর্তাদের নেয়ার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হবে। আর তার পাশা পাশি ভোট কেন্দ্রে যাতে কোন প্রকার অপ্রিতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্থুত রয়েছে । আশা করছি প্রতি বছরের ন্যায় এই বছর ও বান্দরবানে শান্তি পূর্ন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে । জনগন তাদের মনোনিত যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করে দেশ ও দশের সেবা করার সুযোগ প্রদান করবেন ।



ফেইসবুকে আমরা