প্রেস কনফারেন্সে পরিবারের অভিযোগ
পরিস্হিতি২৪ডটকম : চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বোয়ালখালী উপজেলার কধুরখীল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা নীরুপমা বড়ুয়া লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করেন, তার স্বামী দুলাল বড়ুয়াকে তীর্থের নাম দিয়ে ভারতে নিয়ে অর্থের লোভে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার স্পষ্ট নমুনা আমরা লক্ষ্য করছি। মিল্টন ও সুকুমার গংরা এভাবে তীর্থের নামে যে হত্যাকান্ড গঠিয়েছে তার যথাযথ বিচার চেয়ে আজ ২৬ জানুয়ারী শনিবার দুপুর ১২টায় এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের সাবেক সার্কেল অফিসার দুলাল বড়ুয়াকে চট্টগ্রাম থেকে ফুঁসলিয়ে ভারতে বৌদ্ধগয়ায় নিয়ে গিয়ে ‘হত্যা’ করা হয়েছে। নিহত দুলাল বড়ুয়ার কাছে থাকা ৬ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিতে বোধি তীর্থ মিশন প্রধান পরিচালক মিল্টন বড়ুয়া ও সুকুমার বড়ুয়া এ হত্যা মিশনে নেতৃত্ব দেন। পরে হত্যাকান্ডটিকে স্বাভাবিক মৃত্যু বলে চালিয়ে দিতে দুলাল বড়ুয়ার পরিবারকে না জানিয়ে তড়িগড়ি ভারতে দাহ করা হয়েছে। এমন অভিযোগ করেছেন দুলাল বড়ুয়ার স্ত্রী স্কুল শিক্ষিকা নীরুপমা বড়ুয়া (৫৭)। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত মিল্টন বড়ুয়া। তিনি বলেন, স্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা হত্যাকা- বলে চালিয়ে দেয়ার পেছনে পরিবারটির অন্য ফায়দা রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ছেলে নোবেল বড়ুয়া, মেয়ে লিপিকা বড়ুয়া, দুলাল বড়ুয়ার বৃদ্ধা মা প্রতিমা বড়ুয়া কাকা প্রকাশ বড়ুয়া প্রমূখ।
নীরুপমা বড়ুয়া অভিযোগ করেন, গত ১২ নভেম্বর তার স্বামী দুলাল বড়ুয়া নগরীর আন্দরকিল্লাস্থ বোধি তীর্থ মিশন থেকে ভারতের বৌদ্ধগয়া, উত্তর প্রদেশের সারনাথ, শ্রাবন্তিসহ বেশ কয়েকটি তীর্থস্থনে প্যাকেজে ভ্রমনে যান। তীর্থ মিশনের প্রধান মিল্টন বড়ুয়া ও সুকুমার বড়ুয়া এ মিশনের নেতৃত্ব দেন। ২৬ দিনের এ প্যাকেজে ২৫ নভেম্বর সকাল ১১ টায় মিল্টন বড়ুয়া আমাদের ফোন করে জানান আমার স্বামী দুলাল বড়ুয়া স্ট্্েরাক করে মারা গেছেন। এসময় তার অসংলগ্ন কথায় আমাদের সন্দেহ হলে আমার ছেলে নোবেল বড়ুয়াকে ভারতে পাঠানোর প্রস্তুতি নিই। এসময় মিল্টন বড়ুয়া আমাদের জানান আমার স্বামীকে দাহ করে ফেলা হয়েছে।
নীরুপমা বলেন, মেয়ে লিপিকা বড়ুয়ার বিয়ের বাজারের জন্য আমার স্বামীর সঙ্গে নেয়া ৬ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করতে পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে। কোন দেশে স্বাভাবিকভাবে প্রবাসী মারা গেলে ডেথ সার্টিফিকেট দেয়া হয়, সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসকে জানানো হয়। কিন্তু আমার স্বামীর ব্যাপারে তা করা হয়নি। আমার স্বামীর ‘মৃত্যু’র পর আমাদের না জানিয়ে তড়িগড়ি করে লাশ দাহ করা হয়েছে। এতে ‘হত্যাকা-’ সন্দেহ না করার অবকাশ নেই।
দুলাল বড়ুয়ার ছেলে নোবেল বড়ুয়া বলেন, বাবার মৃত্যুর কারণ জানতে চাওয়ায় আন্দরকিল্লা বোধিতীর্থ মিশনের প্রধান পরিচালক মিল্টন বড়–য়া ও রাংকুট বৌদ্ধতীর্থ পরিক্রমার পরিচালক সুকুমার বড়–য়া আমাদের হুমকি দিচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা তুলে না নিলে বাবার মতো পরিবারের সবাইকে ওপারে পাঠিয়ে দিবে।
যোগাযোগ করা হলে মিল্টন বড়ুয়া বলেন, স্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনাকে ভিন্নখাতে নিয়ে পরিবারটি কি করতে চাচ্ছে জানি না। আমারা ওই পরিবারকে হুমকি দিতে যাব কেন। এটা তাদের বানানো কথা।
এদিকে দুলাল বড়ুয়ার মৃত্যুর বিষয়টি হত্যাকা- উল্লেখ করে তার স্ত্রী নীরুপমা বড়ুয়া চট্টগ্রামের চীফ মেট্্েরাপলিটন ম্যাজিষ্ট্্েরট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এতে মিল্টন ও সুকুমার বড়ুয়ার নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ২/৩জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করছেন পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিআইবি)।
এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে পিবিআই এর তদন্তকারী কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার উল্লাহ বলেন, বিষয়টি তদন্তধীন। তাই মামলার স্বার্থে কিছু বলতে পারছি না।