পরিস্হিতি২৪ডটকম : নতুন দিগন্তের বার্তা নিয়ে এসেছে ২০২০ সাল। শুরু হওয়া বছরটিকে এবার অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি বছর হিসেবেই মনে করছেন সকলে। কেননা এ বর্ষেই শুরু হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী। আজকের এই দিনে (১৭ মার্চ) মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মুজিব শতবার্ষিকী শুরু হয়েছে। ফলে ১৭ মার্চ ২০২০ সাল থেকে ২৬ মার্চ ২০২১ সাল পর্যন্ত ঘোষণা করা হয়েছে মুজিববর্ষ। নানা উন্নয়ন ও গঠনমূলক কর্মসূচির মাধ্যমে রাজধানী থেকে শুরু করে গ্রাম পর্যন্ত মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালিত হবে। শুধু বাংলাদেশে নয়, ইউনেস্কোর সদস্যভুক্ত ১৯৫টি দেশে একযোগে পালিত হবে মুজিববর্ষ। আজ শততম জন্মদিনে গোটা জাতি আজ গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে, জাতিসত্তা পরিচয়ের চূড়ান্ত রূপকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। আজ তাঁর এই শততম জন্মদিন যথাযোগ্য রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে উদযাপিত হচ্ছে সারাদেশেসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। তাই বাংলাদেশের মানুষের জন্য সবচেয়ে বেশি আনন্দের দিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন।
বাংলার হাজার বছরের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু একজনই জন্মেছিলেন। যাঁর জন্ম না হলে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হতো না। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তদানীন্তন ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম শেখ লুৎফর রহমান ও মায়ের নাম সায়েরা খাতুন। লুৎফর-সায়েরা দম্পতির এ সন্তানই পরে এ দেশের মানুষের পরাধীনতা মুক্তির ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হন। টুঙ্গিপাড়ার খোকা থেকে হয়ে ওঠেন বঙ্গবন্ধু। বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্কুল জীবনেই রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। কৈশোরে গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র থাকাবস্থায় ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যোগদানের কারণে প্রথমবারের মতো কারাবরণ করেন। পরে কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে অধ্যয়নকালে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও আবুল হাশিমের মতো রাজনীতিকের সান্নিধ্যে আসেন। এ নেতাদের সাহচর্যে তিনি নিজেকে ছাত্র-যুব নেতা হিসেবে রাজনীতির অঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন ছোট-বড় সবার প্রিয়। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল একটি স্বাধীন সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা। তাঁর নেতৃত্বে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয় একটি স্বাধীন দেশ, একটি পতাকা ও নির্দিষ্ট ভূখণ্ড। বঙ্গবন্ধুর জন্মের এই দিনকে স্মরণীয় করে রাখতে চট্টগ্রামের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, সমাজসেবক লায়ন এমজেএফ আহসানুল করিম প্রচলিত বি.এস খতিয়ানের নাম পরিবর্তন করে ‘বঙ্গবন্ধু খতিয়ান’ করার জন্য বিশেষ প্রস্তাবনা পেশ করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকটে। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিশ্বময় বাঙালি জাতি ও বাংলাদেশি জনগণের জন্য এই অদ্বিতীয় ও মাঙ্গলিক দিনে এই মহামানবকে গভীর শ্রদ্ধাভারে স্মরণ করছি। বাঙালি জাতির এই বিশেষ দিনকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য আমাদের প্রাণাধিক প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশের সমস্ত ভূমিকে জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের নামে একটি একক মূল খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত করণের প্রস্তাব করছি। অর্থাৎ অদ্য হইতে বি.এস খতিয়ানের স্থলে ‘বঙ্গবন্ধু খতিয়ান’ হিসাবে বাংলাদেশের সকল ভূমিসমূহকে লিপিবদ্ধ করার জন্য প্রস্তাব করছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট সকল পদস্থ কর্মকর্তাগণ দেশের প্রচলিত আইনের আলোকে বিবেচনা করে উক্ত প্রস্তাব বাস্তবায়নে সদয় পদক্ষেপ নিলে আমি চিরকৃতজ্ঞ থাকিব। আমরা আশা করছি মাননীয় প্রধামমন্ত্রী আহসানুল করিমের উক্ত প্রস্তাবনাটি সদয় বিবেচনা করে ‘বঙ্গবন্ধু খতিয়ান’ সৃষ্টির জন্য সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তর ও মন্ত্রণালয়কে যথাযথ নির্দেশ প্রদান করবেন এবং ‘বঙ্গবন্ধু খতিয়ান’ সৃষ্টি করে মুজিব শতবর্ষকে চিরস্মরণীয় করবেন।