ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের পুরোধা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদীর ৭০তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত :
মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদীর জীবনকর্ম পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করলে প্রজন্ম উপকৃত হবে
পরিস্হিতি২৪ডটকম : বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, ভারতীয় উপমহাদেশের সাধীনতা সংগ্রামী, বঙ্গীয় আইনসভার প্রাক্তন সদস্য মাওলানা মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদীর ৭০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ২৪ অক্টোবর শনিবার সকাল ১০টায় কদম মোবারক মুসলিম এতিমখানা প্রাঙ্গণে মরহুমের মাজারে ফাতেহা পাঠ, কোরআনখানি, জেয়ারত, শ্রদ্ধা নিবেদন ও আলোচনা সভা চট্টগ্রাম ইতিহাস চর্চা কেন্দ্রের উপদেষ্টা, চন্দনাইশ উন্নয়ন সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু বকরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও উন্নয়ন সংগঠক অধ্যাপক মোহাম্মদ মুসা কলিমুল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ইকরামুল হক, গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা ও ব্যাংকার ফজল আহমদ, ইসলামাবাদী গবেষণা পরিষদের সভাপতি মাওলানা রেজাউল করিম তালুকদার, চট্টগ্রাম ইতিহাস চর্চা কেন্দ্রের সভাপতি ইতিহাস গবেষক সোহেল মো. ফখরুদ-দীন, অধ্যক্ষ মোক্তাদির আজাদ খান, লায়ন সি এস কে সিদ্দিকী, সাংস্কৃতিক সংগঠক সজল দাশ, তরুণ গবেষক মোহাম্মদ শামীম, অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইউনুস কুতুবী, ইমাম মোহাম্মদ আবদুল হালিম, মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, অমর কান্তি দত্ত, প্রচার সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ডা. মীর হোসেন প্রমুখ। সভায় বক্তারা বলেছেন, মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদীর জীবনকর্ম পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করলে নব-প্রজন্ম উপকৃত হবে বেশি এবং দেশপ্রেমিক হিসেবে দেশ-সমাজ উন্নয়নে অবদান রাখবে। বক্তারা আরো বলেছেন, প্রাচীন চট্টগ্রামে আজ পর্যন্ত বহু জ্ঞানী-গুণী সমাজকর্মী দেশপ্রেমিকের কারণে চট্টগ্রামের ইতিহাস বিশ্বদরবারে পরিচিত। সে রকম ক্ষণজন্মা মহাপুরুষদের শ্রদ্ধা ও সম্মানের সহিত স্মরণ করা আমাদের কর্তব্য। গুণী মানুষকে সম্মান ও গুণী মানুষের ইতিহাস বর্তমান প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। কালজয়ী সোনার মানুষগুলোর মধ্যে মাওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী অন্যতম। জীবন ও কর্ম, রাজনীতিক, সমাজসংস্কার, সাংবাদিকতা, সাহিত্যি চর্চা, গ্রন্থপ্রণেতা, মানবতাবাদী মানুষ হিসেবে ইসলামাবাদীর অবদান অনস্বীকার্য। চট্টগ্রাম শহরে ঐতিহাসিক কদম মোবারক মুসলিম এতিমখানা তাঁর অবদানের একটি উদাহরণ। তিনি চেয়েছিলেন দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারার দেয়াং পাহাড়ে জাতীয় আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে। সেই ক্ষেত্রে তিনি ঐ পাহাড়ে তৎকালীন সময়ের বঙ্গ সরকার থেকে ৬০০ বিঘা জমি লিজ গ্রহণ করেছিলেন এবং ওই এলাকার জমিদার আনোয়ার আলী খান থেকে ৫০০ কানি ভূমিদান মূলে ইসলামাবাদীকে প্রদান করেছিলেন। এই জমির উপর তিনি চেয়েছিলেন জাতীয় আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে শিক্ষায় অনগ্রসর জাতিকে সুশিক্ষিত করে বিশ্বদরবারে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করবেন। বয়সের কারণে সেটি সম্ভব হয়নি ইসলামাবাদীর। সভায় বক্তারা আরো বলেছেন, এই প্রজন্মের সকলের কাছে আমাদের অনুরোধ আসুন আমরা সোনার মানুষ বিপ্লবী মাওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদীর জীবন ও কর্ম চর্চার মাধ্যমে আলোকিত হই, দেশকে সৎপথে, সুন্দর পথে, পরিচালনার জন্য যোগ্য উত্তরাধিকার হিসেবে নিজেদের অবস্থান তৈরি করি। অনুষ্ঠানে বক্তারা আরো বলেছেন, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের কিংবদন্তি নায়ক, প্রখ্যাত দার্শনিক, মুসলিম সাংবাদিকতার পথিকৃৎ, রাজনীতিক, সমাজসংস্কারক, শিক্ষাবিদ এবং অসাম্প্রদায়িক লেখক হিসেবে বাঙালি মুসলমানের গণজাগরণের জন্য তিনি বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। হিন্দু-মুসলমানের ঐক্যে বিশ্বাসী এবং উদার মানসিকতার অধিকারী ছিলেন বলেই তাঁর কাছে ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সবাই ছিল সমান। তিনি মানুষের হৃদয় জয় করেছিলেন ভালোবাসা দিয়ে। অসাম্প্রদায়িক মনোবলই তাঁকে মহৎ করেছিলেন। তাঁর লেখনি ছিল সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি