পরিস্হিতি২৪ডটকম : কর্ণফুলী তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবীতে ১০টি সংগঠনের উদ্দ্যোগে আয়োজিত মানব বন্ধন ও সাম্পান মাঝিদের বৈঠা বর্জন সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, আগামি সাতদিনের মধ্যে নির্দেশনা অনুযায়ী কর্ণফুলী তীরের ২১৮১ টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা না হলে উচ্চ আদালত অবমাননার অভিযোগ আনার পাশাপাশি কর্ণফুলীর সকল ঘাট অচল করে দেয়া হবে।
আজ ৩০ মার্চ ২০১৯ সকাল ১১ টায় কর্ণফুলী তীরের সদরঘাটে আয়োজিত মানব বন্ধন সমাবেশ আয়োজন করা হয়।
সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সময়ে নিজেদের সাম্পান ঘাটে রেখে শত শত মাঝি মানব বন্ধন ও বৈঠা বর্জন সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন।
সমাবেশে বক্তরা বলেন, দেশের ৯২ শতাংশ আমদানি রপ্তানি যে নদী দিয়ে সম্পন্ম হয় সেই নদী রক্ষায় এতো নাটকীয়তা কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না। গত ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাত্র ৬ দিন উচ্ছেদ অভিযান শেষে কি কারনে জেলা প্রশাসন নিরব হয়ে গেল তা প্রশাসন জানতে চায়। জনগনকে অন্ধকারে রেখে অতীতে কোন ষড়যন্ত্র সফল হয়নি এখনো তা হতে দেয়া যাবে না।
চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের উদ্দ্যোগে আয়োজিত উক্ত মানব বন্ধন ও বৈঠা বর্জন সমাবেশে অংশগ্রহণকারী১০টি সংগঠন হচ্ছে, বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরাম, কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যান সমিতি ফেডারেশন, ইছানগর সদরঘাট সাম্পান মালিক কল্যান সমিতি, সদরঘাট সাম্পান মালিক সমিতি, চরপাথরঘাটা ব্রিজঘাট সাম্পান চালক কল্যান সমিতি, ইছানগর বড় সাম্পান মালিক কল্যান সমিতি, কর্ণফুলী নদী ফিশিং জাহাজ যাত্রী পারাপার কল্যান সমিতি,সদরঘাট ব্যবসায়ী কল্যান সমিতি ও সদরঘাট লেবার কল্যান সমিতির নেতৃবৃন্দ অংশ গ্রহন করেন।
মানববন্ধন পূর্ব সমাবেশে প্রধান বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি নাজিমুদ্দিন শ্যামল, কর্ণফুলী গবেষক ও বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরাম চট্টগ্রাম সভাপতি অধ্যাপক ড. ইদ্রিচ আলী, চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আলীউর রহমান, কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যান সমিতি ফেডারেশন সভাপতি এস এম পেয়ার আলী, সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, ইছানগর সদরঘাট সাম্পান মালিক কল্যান সমিতি উপদেষ্টা জিন্নাত আলী লেদু, আবুল কালাম, সহ সভাপতি জাগির আহম্মদ, সহ সম্পাদক আবদুল মালেক ও অর্থ সম্পাদক ফরিদ আহম্মদ, চরপাথরঘাটা ব্রিজঘাট সাম্পান চালক কল্যান সমিতির সভাপতি জাফর আহমেদ, ইছানগর বড় সাম্পান মালিক কল্যান সমিতি সভাপতি সাইফুর রহমান, কর্ণফুলী নদী ফিশিং জাহাজ যাত্রী পারাপার কল্যান সমিতির সভাপতি মো. মিজানুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আলী নূর,সদরঘাট ব্যবসায়ী কল্যান সমিতি সভাপতি মোহাম্মদ জুয়েল, সদরঘাট লেবার কল্যান সমিতির সভাপতি আবদুল জব্বার প্রমুখ। নেতৃবৃন্দ অংশ গ্রহন করেন।
সিইউজে সভাপতি নাজিমুদ্দিন শ্যামল বলেন, উচ্ছেদ অভিযান সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত কর্ণফুলী রক্ষার এই আন্দোলন থামবে না। কর্ণফুলী রক্ষায় চট্টগ্রামের সকল মানুষ আজ এক হয়েছে আমরা আদালতের নির্দেশনার বাস্তবায়ন চাই।
অধ্যাপক ইদ্রিচ আলী বলেন, আদালতের নির্দেশনা নিয়ে লুকোচুরি চলবে না। আমরা প্রশাসনকে সতর্ক করছি আগামিতে আপনাদের কাটগড়ায় দাড়াতে হবে। আদালত এবং জনগনের কাঠগড়ায় দোষী হওয়ার আগে উচ্ছেদ অভিযান সম্পন্ন করুন। অন্যথায় আপনাদের বাধ্য করা হবে।
আলীউর রহমান বলেন, বন্দর কতৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসন কর্ণফুলী তীরের জনি ইজারা ও ব্যবহার করে অর্থ উর্পাজন করে। কিন্তু কর্ণফুলী রক্ষা ক্ষেত্রে বিমাতাশুলভ আচরণ করবে তা মেনে নেয়া যায়না। কর্ণফুলী তীরের অবৈধ স্থাপনা আগামি ৭ দিনের মধ্যে শুরু না হলে আমরা রাস্তায় নামবো, উচ্চ আদালতে যাবো।
তিনি বলেন, গুটিকয়েক মানুষের স্বার্থ রক্ষায় জাতীয় স্বার্থ বিসর্জন দেয়ার কাজ কিছুতেই মেনে নিবে না জনগন।
কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যান সমিতি ফেডারেশন সভাপতি এস এম পেয়ার আলী বলেন, উচ্ছেদ অভিযানে ঐতিহাসিক সদরঘাটের যাত্রী ছাউনি ভেঙে ফেলা হয়েছে। বন্দর কতৃপক্ষ ও সিটি মেয়রকে আমরা উক্ত যাত্রী ছাউনি ও দূর্যোগ আশ্রয় কেন্দ্র পূনরায় নির্মানের দাবী জানাচ্ছি। দূর্যোগ ও ঘূর্ণিঝড়ের সময় মাঝিদের ঘাটে থাকতে হয়। ঘাটে যাত্রী ছাউনি ও দূর্যোগ আশ্রয় কেন্দ্র না থাকলে মাঝি ও যাত্রী ঝড় তুফানের সময় যাবে কোথায়। বক্তারা ঐতিহাসিক সদরঘাট পাকা ও নান্দনিক ভাবে নির্মানের দাবী জানান।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি