পরিস্হিতি২৪ডটকম : প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষ উদ্যাপনে অতিউৎসাহী কিংবা বাড়াবাড়ি যেন না হয় সেজন্য দলের সংসদ সদস্যদের সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, অতিউৎসাহী হয়ে কিছু না করে বরং নতুন প্রজন্মের সামনে জাতির পিতার আত্মত্যাগের কথা তুলে ধরতে হবে।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে জাতীয় সংসদ ভবনে সরকারি দলের সভাকক্ষে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বৈঠক সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, মুজিববর্ষকে সামনে রেখে যত্রতত্র, যেভাবে-সেভাবে জাতির পিতার ম্যুরাল বানানো চলবে না। এক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট অনুমোদিত নীতিমালা অনুযায়ী ম্যুরালগুলো নির্মাণ ও স্থাপন করতে হবে। এক্ষেত্রে টিআরের টাকা এক্ষেত্রে ব্যবহার না করে বরং মুজিববর্ষে গৃহহীনদের গৃহ নির্মাণ করে দেওয়ার বিষয়টিকে গুরুত্ব প্রদানের জন্য তিনি সংসদ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান। রাত সাড়ে ৮টা থেকে সোয়া ১০টা পর্যন্ত এ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে উপস্থিত একাধিক সংসদ সদস্য সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা সংসদ অধিবেশনে মন্ত্রী-এমপিদের অনুপস্থিতির বিষয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন। সূত্র জানায়, এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘সংসদ অধিবেশনে আমি নিয়মিত উপস্থিত থাকি। আমার পেছনের আসনগুলোতে যেসব মন্ত্রী-এমপিরা বসেন, তারা যদি অনুপস্থিত থাকেন—সেসব আসনগুলো ফাঁকা দেখালে মানুষের কাছে ভুল বার্তা যায় যে, মন্ত্রী-এমপিরা সংসদে আসেন না। এ কারণে যেসব মন্ত্রী-এমপিরা নিয়মিত সংসদে উপস্থিত থাকতে না পারেন, তাদের আসনগুলো দূরবর্তী স্থানে স্থানান্তরের সতর্কবার্তাও উচ্চারণ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি এ সময় সংসদ অধিবেশন চলাকালে মন্ত্রী-এমপিদের বাইরের কর্মসূচি থেকে যতটা সম্ভব কম রেখে সংসদে নিয়মিত অংশগ্রহণের জন্যও নির্দেশ দেন।
মুজিববর্ষের প্রতিটি কর্মসূচিতে দলের সংসদ সদস্যদের কার্যকর উপস্থিত থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী ১৯ মার্চ সংসদে মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে শিশুমেলা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে সংসদ সদস্যরা যেন উপস্থিত থাকেন। এছাড়া আগামী ২২ ও ২৩ মার্চ জাতীয় সংসদে মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে বিশেষ অধিবেশন বসবে। ঐ অধিবেশনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ভুটানের রাজাসহ বিদেশি অতিথিরা বক্তব্য রাখবেন। সুস্থ থাকলে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জিও আসবেন। বিশেষ অধিবেশনে যেসব মন্ত্রী-এমপিরা বক্তব্য রাখবেন তাদের এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। স্পিকারের কাছে বক্তব্য রাখার জন্য আগে থেকেই চিঠি দিয়ে আবেদন করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে বিশেষ স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করা হবে। সেটি বিশ্বের সব দেশের স্পিকারদের কাছে শুভেচ্ছা স্মারক হিসেবে পৌঁছে দেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সংসদীয় দলের বৈঠকে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ, অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, আ স ম ফিরোজ, হাফিজ আহমেদ মজুমদার, মযাহারুল হক প্রধান, গাজী শাহনেওয়াজ, শামীম ওসমান, ছোট মনির প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।