পরিস্হিতি২৪ডটকম : এশিয়ার বিখ্যাত প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছেড়েছে। শনিবার রাত সাড়ে নয়টার পরে হালদা নদীতে ডিম সংগ্রহের অপেক্ষায় থাকা মানুষরা ডিমের দেখা পান। ডিম ছাড়ার খবর পেয়ে খলিফার ঘোনা, রামদাশহাট, মুন্সির হাট থেকে মদুনাঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে ডিম সংগ্রহ করা শুরু করেন এতোদিন ধরে অপেক্ষায় থাকা ডিম সংগ্রহকারীরা।
এর আগে হালদা নদীতে শনিবার সকাল থেকে নমুনা ডিম দেখা যায়। তখন মৎস্য অফিস জানায়, হালদায় জোয়ার বা পাহাড়ী ঢলের সৃস্টি হলেই রুই, কাতল, মৃগেল, কালা বাউশ মাছের ডিম ছাড়তে পারে। এর আগেও অমাবশ্যায় হালদা নদীর জোয়ারে ও ঘূর্ণিঝড় ফণির প্রভাবে মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে মা মাছের নমুনা ডিম পাওয়া যায়। সেই সময়ে ডিম সংগ্রহকারীরা হালদা নদীতে ডিম সংগ্রহ করে।
হাটহাজারী উপজেলার মাছোয়াঘোনাসহ বিভিন্ন এলাকার ডিম সংগ্রহকারীরা জানান, এতোদিন পুরোদমে ডিম না দেয়ার কারণে হালদা নদীতে জাল ফেলেও পর্যাপ্ত পরিমানে ডিম পাওয়া যায়নি। প্রকৃতি অনুকুলে না থাকায় এতোদিনে মা মাছ পর্যাপ্ত ডিম ছাড়েনি। আজ রাতে উপযুক্ত পরিবেশ পাওয়ায় মা মাছ পর্যাপ্ত পরিমান ডিম ছেড়েছে।
তারা আরও জানান, মা মাছ সাধারণত অমাবস্যা, অষ্টমী ও পূর্ণিমা তিথিতে নদীতে ডিম ছাড়ে। গত পূর্ণিমায় তেমন বর্ষণ হয়নি। এবার অষ্টমী তিথিতে বজ্রসহ প্রবল বর্ষণ হয়েছে। তাই নদীতে ঢলের সৃষ্টি হলে মা মাছ ডিম ছাড়তে পারে এমন আশায় ডিম সংগ্রহকারীরা হালদা নদীতে অপেক্ষা করছিল। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টায় জোয়ার শুরু হয়। আর ভাটার সময় নদীতে ঢলের সৃষ্টি হলে শনিবার রাতে মা মাছ ডিম ছাড়ে।
এদিকে শনিবার সকালে নমুনা ডিম ছাড়ার পর উপজেলা মৎস্য অফিসার মো.আজহারুল ইসলাম জানান, হালদা নদীতে কার্প জাতীয় মা মাছ ডিম ছেড়েছে এবং রাত সাড়ে ৯টার পর থেকে হালদার নদীর বিভিন্ন অংশ থেকে ডিম সংগ্রহকারীরা ডিম সংগ্রহ করছেন। বর্তমানে প্রায় ৪শতের বেশী ডিম সংগ্রহকারী হালদা নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে ডিম সংগ্রহ করছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ রুহুল আমিন জানান, মাছুয়া ঘোনা, শাহ মাদারি এবং মদুনা ঘাটসহ ৩টি হ্যাচারির কুয়া হালদার নদী থেকে সংগৃহীত ডিম সংরক্ষণের জন্য প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। প্রয়োজন হলে উপজেলা প্রশাসন আরও কুয়া তৈরি করবে। হালদায় জেলেদের ডিম সংগ্রহে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহায়তা দেওয়া হবে।