পরিস্হিতি২৪ডটকম : শেষ হয়েছে পদ্মা সেতুর ৪১টি স্প্যান বসানোর কাজ। কাঠখড়, ঘাত-প্রতিঘাত, গুজব, আরও কত বাধা পেরিয়ে দৃশ্যমান হলো ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটারের সেতুটি। এতে নৌপথের ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ। বিজয়ের মাসে সর্বশেষ স্প্যানটি বসানোর মাধ্যমে এ যেন আরেকটি বিজয় লাভ করলো বাংলাদেশ।
সেতু দৃশ্যমান হওয়ায় আনন্দ প্রকাশ করে শরীয়তপুর সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি অ্যাডভোকেট মুরাদ হোসেন মুন্সী বলেন, প্রথম স্প্যানটি বসানোর সময় আমার দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। আমি সেদিন থেকে আশাবাদী ছিলাম, কবে শেষ হবে স্প্যান বসানোর কাজ। আজ স্প্যান বসানো শেষ হলো। অল্প সময়ের মধ্যে পদ্মা সেতু চালু হবে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই। যিনি সম্পূর্ণ নিজ অর্থায়নে বিশ্বব্যাংককে চ্যালেঞ্জ করে দেখিয়ে দিলেন আমরা পারি পদ্মার বুকে সেতু করতে। মনে হচ্ছে বিজয়ের মাসে আরেকটি বিজয়।’
শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমাদের দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষিত আকাঙ্ক্ষার বিষয় হলো পদ্মা সেতু। আজ সবশেষ স্প্যানটি বসলো। পুরোপুরি সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে দৃশ্যমান হলো পদ্মা সেতু। আমাদের ইচ্ছা ছিল, পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকা যাব। এখন ইচ্ছা পূরণের পালা।’
সিনিয়র অ্যাডভোকেট ও লেখক আলী আহম্মদ খান বলেন, ‘আমি প্রথমে ধন্যবাদ দেব আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। কত বড় সাহসী ও কত বড় কলিজা থাকলে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে চ্যালেঞ্জ করে পদ্মা সেতু করে। সেতুটি চালু হলে দক্ষিণ-উত্তরবঙ্গের সবার কর্মসংস্থান হবে। তৈরি হবে শিল্প ও কলকারখানা। এটা আমাদের আনন্দ ও গৌরবের।’
বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টা ২ মিনিটে ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের ওপর বসানো হয় ৪১তম স্প্যানটি। এর মাধ্যমেই দৃশ্যমান হলো ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু।
শুধু তাই নয়, মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তে বসানো স্প্যানগুলোতে রেলওয়ে স্ল্যাব ও রোডওয়ে স্ল্যাব বসানোর কাজও দ্রুতগতিতে চলমান। সেতুতে প্রয়োজন হবে ২ হাজার ৯১৭টি রোডস্ল্যাব। এরই মধ্যে এক হাজার ২৩৯টিরও বেশি স্ল্যাব বসানো হয়েছে। রেলওয়ের জন্য প্রয়োজন হবে ২ হাজার ৯৫৯টি রেলস্ল্যাব। যার মধ্যে এ পর্যন্ত এক হাজার ৮৬০টিরও বেশি বসানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারে প্রথম স্প্যান বসানো হয়। প্রথম স্প্যান থেকে শুরু করে ৩৯তম স্প্যান বসানো পর্যন্ত সময় লেগেছে তিন বছরের ওপর।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে পদ্মা সেতুর কাঠামো। সেতুর উপরের অংশে যানবাহন ও নিচ দিয়ে চলবে ট্রেন।
সুত্র : জাগো নিউজ ২৪ডটকম ।