পরিস্হিতি২৪ডটকম : মৌলবাদ সব দেশের, সব মানুষের, সব ধর্মের জন্যও বিপজ্জনক উল্লেখ করে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, মৌলবাদী গোষ্ঠী সারা বাংলাদেশে হুমকি-ধমকি দিয়ে মাঠ গরম করার চেষ্টা করছে। এই মৌলবাদী গোষ্ঠী ধর্মীয় সংগঠন করে রাজনৈতিক খায়েশ মেটাচ্ছে। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের মূল নীতি ও আদর্শে বিশ্বাসী রাজনৈতিক কর্মী সকলেই ঐক্যবদ্ধভাবে যদি প্রতিবাদ করি, এরা লেজ গুটিয়ে পালিয়ে যাবে। সেটা আমরা জানি। কিন্তু আমরা গণতান্ত্রিক আদর্শে বিশ্বাসী বলে সেটা করছি না।
২৭ নভেম্বর শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক মিলনায়তনে সাপ্তাহিক চাটগাঁর সংবাদ’র অষ্টম বষপূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
চাটগাঁর সংবাদের সম্পাদক ও প্রকাশক এবং দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নুরুল আবছার চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও উৎপল বড়ুয়া সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন স্যোসাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আনোয়ারুল আজিম আরিফ, প্রধান বক্তা ছিলেন চসিক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন, বিশেষ অতিথি ছিলেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, বাশার গ্রুপের চেয়ারম্যান এন্ড সিইও আবুল বাশার আবু, বিশিষ্ট ব্যাংকার আব্দুল গাফফার চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা কর আইনজীবি সমিতির সাবেক সভাপতি এ্যাডভোকেট মোঃ ইলিয়াছ, বাফা পরিচালক এ এস এম মাহবুবুর রহমান।
এতে আরো বক্তব্য রাখেন বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার আখতারুজ্জামান কাইসার, ওমরগনি এমইএস বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ আ ন ম সরওয়ার আলম, পটিয়া শোভনদন্ডী কলেজের অধ্যক্ষ হামিদ হোসাইন, সাতকানিয়া আদর্শ মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জয়নাল আবেদীন, সাবেক কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিল্পব, মক্কা আওয়ামী ফাউন্ডেশনের সভাপতি মোজাম্মেল হক, মান্নান মোটরস এর স্বত্বাধিকারী এম এ মান্নান, সমাজসেবক ও ব্যবসায়ী নুরুল কবির চৌধুরী, যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য দেবাশীষ পাল দেবু, বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি-চট্টগ্রাম শাখার সহ-সভাপতি প্রণব সাহা, আওয়ামীলীগ নেতা ফয়েজ আহমদ লিটন, এ এইচ এম গনি সম্রাট, হোসেন কবির, আব্দুল মোতালেব, শহিদুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, আইয়ুব খান, সুমন বড়ুয়া, শাহাদাত হোসেন সাহেদ, জিহানুর রহমান প্রমূখ। অনুষ্ঠানে মরনোত্তর সম্মাননা প্রদান করা হয় চাটগাঁর অহংকার মরহুম জননেতা আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু ও চট্টলবীর জননেতা এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরীকে সম্মননা প্রদান করা হয়। আরো বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য সাবেক এমএনএ আবু ছালেহ, বাশার গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ বাশার আবু, আব্দুল হক চেয়ারম্যান, কামাল উদ্দীন চৌধুরী, জাকারিয়া সিকদার বাদশা, শফি আহম্মদ চৌধুরী, হাজী নুরুল আবছার, প্রণব সাহা, দেবাশীষ পাল দেবু ও মোঃ রাশেদুল ইসলামকে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, চাটগাঁর সংবাদ পরিবারের মো. সেলিম উদ্দিন চৌধুরী, মো.মোস্তফা কামাল নিজামী, এস বি জীবন, সৈয়দ শিবলী ছাদেক কফিল, মো.হারুনুর রশিদ, মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী, এস কে সাগর, লায়ন মাহমুদুর রহমান চৌধুরী মান্না, মো.শামীম আজাদ, মো.আব্দুল্লাহ আল মামুন, মোঃ রিয়াদুল আলম, এস এ নয়ন, প্রভাস চক্রবর্তী, শিহাব উদ্দীন শিবলু, খোকন সুশীল, মো: এনামুল হক মিঠু, সাহাব উদ্দিন সাঈদ, সোহেল তাজ, ইমরান সোহেল, কামরুল ইসলাম মোস্তফা, মো.শহীদুল ইসলাম, সুমন বৈদ্য, মো.মাইনউদ্দিন হাসান, তৌহিদুর রহমান, মো.আমানউল্লাহ, মো.ওসমান হোসেন, মো. ইসমাইল, এইচ এম সাইফুদ্দীন, মো.আবু সুফিয়ান, মো.জসীম উদ্দিন চৌধুরী, সোহেল রানা, মো. ইকবাল হোসেন প্রমুখ।
শিক্ষা উপমন্ত্রী আরো বলেন, রাজনীতি করার খায়েশ থাকলে আপনারা রাজনৈতিক দল গঠন করে রাজনীতি করেন, অসুবিধা নেই। কিন্তু ধর্মীয় অনুষ্ঠান করে, ধর্মীয় সংগঠন করে সেখানে রাজনৈতিক কথা বলছেন, নিজের রাজনৈতিক খায়েশ মেটানোর চেষ্টা করছেন। এই ধরনের কাজ আমাদের দেশে হচ্ছে। কিন্তু কেন হচ্ছে- সেটা আমাদের নিজেদের দূর্বলতার কারণে হচ্ছে। আমাদের মধ্যে এদের মতাদর্শী অনেকে ঢুকে গেছে বলেই আজকে এরা এতো সাহস পাচ্ছে। এ জন্য এরা হুমকি-ধমকি দেওয়ার সাহস পাচ্ছে। আসুন, আত্মসমালোচনার মাধ্যমে নিজেদের শুদ্ধ করি। নিজেদের শুদ্ধ করতে পারলে পরাজিত শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না। তিনি বলেন, পারিবারিক পরিচয়ে কেউ মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের পক্ষে হবে তা কিন্তু নয়, আওয়ামী লীগ হবে তা তো নয়ই। আমাদের মধ্যে অনেকে আছেন পারিবারিকভাবে এক আদর্শে, কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে সে অন্য আদর্শের। আবার অনেকে পারিবারিকভাবে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের বিপক্ষে, কিন্তু সে ব্যক্তিগতভাবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের আদর্শে থেকে কাজ করতে চায়। এটা আমাদের মাথায় রাখার প্রয়োজন আছে। তিনি আরো বলেন, যে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী আজ মাঠে আছে, তারা শুধু সাম্প্রদায়িক তা কিন্তু নয়। তারা আসলে বাতেল ফেরকার মানুষ, সুন্নীয়ত বিরোধী মানুষ। তারা যেভাবে কট্টর ও মৌলবাদের চর্চা করে, সেভাবে ইসলামের চর্চা আমরা করে না। আমাদের নবী করিম (সঃ)’র যে দ্বীন-ই-ইসলাম, তা অসামপ্রদায়িক ও সকলের সাথে সমভাব রাখার শিক্ষা দেয়। সেই ইসলামের পক্ষে আমাদের যে অবস্থান, তা জানান দিতে হবে। এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ যে ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করে, দ্বীন-ই-ইসলামে বিশ্বাস করে। এ পরাজিত শক্তিকে এই বাংলাদেশে আমরা আর মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে দেব না। আমরা দেখেছি, এ উগ্রবাদী গোষ্ঠী যেখানেই, যে দেশেই তারা ক্ষমতা নিয়েছে, সেখানেই বিপদ ডেকে এনেছে। এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। বাংলাদেশের পত্র-পত্রিকা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরা ধর্ম নিয়ে অপপ্রচার করে। এদের অপপ্রচারের জবাব দিতে হবে।