পরিস্হিতি২৪ডটকম : হাসপাতাল, ক্লিনিক ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের চেম্বার থেকে রোগীরা বের হলেই মেডিকেল প্রমোশন অফিসার নামক ওষুধ কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধিরা জাপড়ে ধরেন ব্যবস্থাপত্র/প্রেসক্রিপশনে চিকিৎসক কি কি ওষুধ লিখেছেন তার ছবি তুলেন। বিশেষ করে তার প্রতিষ্ঠানে ওষুধ লিখেছেন কিনা? এগুলো আবার ছবি তুলে তাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রমান হিসাবে পাঠাতে হয়। সাধারন রোগীরা বিশেষ করে মহিলা রোগীরা বিষয়টিকে হয়রানি ও বিঢম্বনা হিসাবে মনে করছেন। একই সাথে কিছু অসাধু ওষুধ কোম্পানী তাদের ওষুধ বিপণনে চিকিৎসকদের মাঝে উপহার ও নানা ধরণের সুবিধা দিয়ে থাকেন। তাদের সেই প্রণোদনা ও অবৈধ সুবিধা নিয়ে সংস্লিষ্ঠ চিকিৎসক রোগীদের মাঝে ঐ প্রতিষ্ঠানের ওষুধ লিখেছেন কিনা তা তদারকি করতে গিয়ে রোগীরা বিঢম্বনার শিকার হতে হচ্ছেন। একই সাথে একজন চিৎিসককে এভাবে অনৈতিক ভাবে সুবিধা প্রদান করে তাদের মানহীন ও অপ্রয়োজনীয় ওষুধ লিখতে প্রলুদ্ধ করার ঘটনাকে চিকিৎসকদের পেশার মর্যাদা ক্ষুন্ন করছেন বলে মন্তব্য করে হাসপাতাল, ক্লিনিক ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের চেম্বারে মেডিকেল প্রমোশন অফিসারদের এ ধরণের অনৈতিক চর্চা ও হয়রানি বন্ধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষ ও বিএমএ এর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম নগর ও বিভাগীয় নেতৃবৃন্দ।
বুধবার ০৩ নভেম্বর গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত দাবি জানান। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসসিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু ও ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান প্রমুখ।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করে বলেন ওষুধ বিপণনে দীর্ঘদিন ধরেই একটি অসুস্থ প্রতিযোগিতা ও চর্চা অব্যাহত রয়েছে। যার ফলশ্রুুতিতেই মানহীন ও ভেজাল ওষুধে যেরকম পুরো দেশ ভরপুর। তেমনি কিছু চিকিৎসকরাও অনৈতিক সুবিধা লাভের জন্য রোগীদের মাঝে মানহীন কোম্পানীর ওষুধ ও বিপুল পরিমান ওষুধ লিখে ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন। আবার অনেকে ফুড সাপ্লিমেন্ট, শিশুখাদ্যসহ নানা ধরণের অপ্রয়োজনীয় ওষুধও আনসাংগিক অনেককিছু ব্যবস্থা পত্রের সাথে জুড়ে দিচ্ছেন। যা অনৈতিক শুধু নয়, চিকিৎসকের প্রতি রোগীদের আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতি চরম অবমাননা কর। যার কারনে দেশের বিপুল সংখ্যক রোগী যে কোন চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাড়ি জমান। চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিদেশ নির্ভরতা বাড়ছে।
নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ আরও করে বলেন ওষুধ প্রশাসন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দেশের ওষুধ প্রশাসনে এ ধরণের অনৈতিক বিপণন ব্যবস্থা, জীবন রক্ষাকারী ওষুধে মানহীন ও ভেজাল কোম্পানীর ওষুধ বিপণণে কার্যকর তদারকি জোরদার করার কথা থাকলেও নানা অজুহাতে তারা অসাধু ব্যবসায়ী ও বিপণন প্রতিনিধিদের হাতে ছেড়ে দিয়েছে। সেকারনে শুধু চিকিৎসা সেবা নয়, দেশের জীবন রক্ষাকারী ওষুধের বাজারও বিদেশী কোম্পানীর ওষুধের ওপর নির্ভরশীল হয়ে গেছে। যা পুরো দেশের ওষুধ শিল্পের জন্য চরম হটকারিতা ছাড়া কিছুই নয়। দেশীয় ওষুধ শিল্প ক্ষতিগ্রস্থ হবে, মূল্যবান বৈদশিক রেমিটেন্স বিদেশে পাচার হবে। ওষুধ শিল্পে দেশীয় কর্মসংস্থান ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। তাই ওষুধ বিপণনে অনৈতিক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি মানহীন ও ভেজাল ওষুধের বাজার তদারকি জোরদারের জন্য ওষুধ প্রশাসনের আশু সংস্কার দাবি করেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি