পরিস্হিতি২৪ডটকম : নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের নবনিযুক্ত স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশ প্রকৃতপক্ষে ও আন্তরিকভাবে সফল হয়েছে। তবে এ সমস্যার জাদুকরি কোনো সমাধান নেই।
স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে নিউইয়র্কে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা ও মতবিনিময়ের সময় তিনি এ সব কথা বলেন।
প্রতি বছরের মত এবারো নতুন বছর ২০২০-কে স্বাগত জানিয়ে নিউইয়র্কের সাংবাদিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে এবং বিচক্ষণ কূটনৈতিক প্রজ্ঞায় জাতিসংঘের সঙ্গে বাংলাদেশ অত্যন্ত ঘনিষ্ট সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। এই ঘনিষ্ট সম্পর্ক উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বাংলাদেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর আরও সাফল্যের সাথে জাতিসংঘে তুলে ধরতে স্থায়ী মিশন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তার বক্তব্যে উঠে আসে ৭৪তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অংশগ্রহণ, রোহিঙ্গা ইস্যু, শান্তিরক্ষা কার্যক্রম, জাতিসংঘ নেতৃবৃন্দকে বাংলাদেশ বিষয়ে সচেতন রাখা, বিভিন্ন রেজুলেশনে সহযোগী ও সমন্বয়কের ভূমিকা পালন, নির্বাচনে বিজয়, শান্তির সংস্কৃতি রেজ্যুলেশন গ্রহণ, জাতিসংঘের তহলবিল ও বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ, নিরাপত্তা পরিষদে সম্পৃক্ততা, একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিকীকরণ, জাতিসংঘে প্রথমবারের মতো শোক দিবস পালন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন, গ্রুপ অব ফ্রেন্ডস্ প্লাটফর্মকে এগিয়ে নেওয়া ও কোমল কূটনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ২০১৯ সালে জাতিসংঘে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ ও সফলতার বিভিন্ন দিক। এ সকল অংশগ্রহণ ও অর্জিত সাফল্যের বিষয়গুলো সহজভাবে সারা বছর প্রবাসী বাঙালিসহ দেশের জনগণের মাঝে সংবাদের মাধ্যমে উপস্থাপনের জন্য সাংবাদিকবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান স্থায়ী প্রতিনিধি।
যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতিসংঘে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী অর্থাৎ মুজিববর্ষ উদযাপনের বিভিন্ন পরিকল্পনাসহ ২০২০-এ জাতিসংঘে বাংলাদেশের যে সকল বিষয় বিশেষভাবে গুরুত্ব পাবে এবং যেসকল চ্যালেঞ্জ রয়েছে সে সমন্ধে আলোকপাত করেন রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।
রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে সাংবাদিকদের একাধিক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেন, এ সমস্যার সমাধানে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে। এই চাপ যাতে অব্যাহত থাকে সে লক্ষ্যে কাজ করছে বাংলাদেশ।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের রুলিংয়ের ওপর নির্ভর করবে বাংলাদেশের পরবর্তী পদক্ষেপ। তবে জাতিসংঘে বিশ্বের বহু সেদস্য দেশ তাদের এজেন্ডাতে রোহিঙ্গা ইস্যুকে প্রধান্য দিয়ে কাজ করছে।
বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করার ব্যাপারে কতটুকু অগ্রগতি হয়েছে এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে রাবাব ফাতিমা বলেন, বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন এ লক্ষে কাজ করছে। তবে ইউনেস্কোতে একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে অন্তর্ভূক্ত হওয়ায় এই প্রচেষ্টা অনেকখানি এগিয়েছে।
বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের প্রথম সচিব (প্রেস) নূরএলাহি মিনার সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে মিশনের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।