পরিস্হিতি২৪ডটকম : ‘মানুষের লোভের আগুনে পুড়ে আর যেন নিরীহ প্রাণের মৃত্যু না ঘটে’ দেশের ভবন মালিকদের জন্য সতর্ক বার্তা দিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
রাজধানীর বনানীতে এফ আর টাওয়ারে বৃহস্পতিবারের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনায় তথ্যমন্ত্রী শুক্রবার দুপুরে ঢাকায় শিল্পকলা একাডেমিতে বক্তব্য দানকালে এ কথা বলেন। তিনি ওয়ার্ল্ড কমিউনিকেটরস কাউন্সিল (ডব্লিউসিসি)-বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের উদ্বোধনী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন। এ সময় তিনি অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের জন্য গভীর শোক ও আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন। এ দুর্ঘটনার কারণ ও পুণরাবৃত্তি রোধের দিকে দৃষ্টিপাত করেন।
এ সময় তিনি বলেন, ‘অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ভবনটি নির্মাণ বিধি (বিল্ডিং কোড) অনুসরণ করে নির্মিত নয়। অনুমোদনবিহীন বেশি তলা নির্মিত এ ভবনে বিধিমোতাবেক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাও ছিলো না। অর্থাৎ মালিকের লোভের আগুনে পুড়ে হতাহত হয়েছে নিরীহ মানুষ। এর পুণরাবৃত্তি যেন না হয়, সে বিষয়ে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে।’
মন্ত্রী এ সময় ওয়ার্ল্ড কমিউনিকেটরস কাউন্সিলের উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, ‘নিজ দেশ, সংস্থা ও আত্মউন্নয়নের জন্য যোগাযোগের বিকল্প নেই। তৈরি পোষাক শিল্পে জিএসপি সুবিধা বাতিলের পরও বাংলাদেশ বিশ্ব প্রতিযোগিতায় এ শিল্পে তার প্রবৃদ্ধি অটুট রেখেছে, চীন আজ আমাদের প্রতিযোগী। এর মূল কারণ দুটি। একটি আমাদের উৎপাদন দক্ষতা আর অপরটি আমাদের বায়িং হাউজদের যোগাযোগ দক্ষতা। অর্থাৎ শুধু উৎপাদন দক্ষতা থাকলেই হবে না, প্রয়োজন যোগাযোগে দক্ষতাও।’
‘গত দশ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিস্ময়কর উন্নয়নের পথে এগিয়েছে’ উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘গত দশ বছরে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়ে আজ প্রায় দু হাজার ডলার। উচ্চ প্রবৃদ্ধির হার অব্যাহত রাখা পৃথিবীর প্রথম পাঁচটি দেশের অন্যতম বাংলাদেশ। বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল, প্রায় ১৭ কোটি মানুষের দেশ যেখানে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ১১শরও বেশি মানুষের বাস, আর মানুষপ্রতি জমির পরিমাণ দেশে সর্বনিম্ন, যে দেশ পঞ্চাশের দশক থেকে খাদ্যঘাটতির দেশ, সেই বাংলাদেশ আজ খাদ্য রপ্তানীর দেশ।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের এই অভূতপূর্ব উন্নয়নে যোগাযোগকর্মীসহ সকলের ভূমিকা রয়েছে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই দেশকে সমৃদ্ধতর করে। বিশ্বব্যাপী উন্নয়নখাতে বেসরকারি সংস্থাগুলোর ভূমিকা আগে থেকে এখন অনেক সক্রিয়। কূটনৈতিক তৎপরতাও এখন অর্থনীতিমুখী। নিজের সমৃদ্ধির পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশগুলোর সমৃদ্ধিও জরুরি। ওয়ার্ল্ড কমিউনিকেটরস কাউন্সিল একইসাথে বিশ্ব এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রসারিত করবে।’
ওয়ার্ল্ড কমিউনিকেটরস কাউন্সিল-বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের নির্বাহী কমিটির সভাপতি এএসএম আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান এবং পাবলিক রিলেশনস কাউন্সিল অভ্ ইন্ডিয়ার (পিআরসিআই) চিফ মেন্টর ও চেয়ারম্যান এমেরিটাস এমবি জয়রাম বিশেষ অতিথি হিসেবে এবং পিআরসিআইয়ের অপর প্রতিনিধিবর্গের মধ্যে গভর্নিং কাউন্সিল চেয়ারম্যান বিএন কুমার, ন্যাশনাল ভাইস-প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক বিকে সাহু এবং কোলকাতা চ্যাপ্টারের চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ দাস অতিথি হিসেবে সভায় বক্তব্য রাখেন।
সমাপনী বক্তব্যে সকল অংশগ্রহণকারীকে ধন্যবাদ জানান ডব্লিউসিসি বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের মহাসচিব আবীর শ্রেষ্ঠ।