পরিস্হিতি২৪ডটকম : বরেণ্য সঙ্গীতশিল্পী সুবীর নন্দীর মরদেহ বুধবার সকালে সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকায় আনা হবে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ।
তিনি জানান, বুধবার সকালে সুবীর নন্দীর মরদেহ ঢাকায় পৌঁছানোর পর প্রথমে নেওয়া হবে তার গ্রিন রোডের বাসায়। পরে বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই শিল্পীর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাবে সর্বস্তরের মানুষ। এছাড়া ঢাকেশ্বরী মন্দির ও রামকৃষ্ণ মিশনেও নেওয়া হবে তার কফিন।
বরেণ্য সঙ্গীতশিল্পী সুবীর নন্দী মঙ্গলবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে সিঙ্গাপুরে জেনারেল হাসপাতালে মারা যান। শিল্পীর মেয়ে ফাল্গুনী নন্দী তার বাবার মৃত্যুর বিষয়টি সিঙ্গাপুর থেকে ফোনে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন। শিল্পীর মৃত্যুর খবর পৌঁছানোর পর দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নেমে আসে শোকের ছায়া। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিল্পীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দেন।
সুবীর নন্দীর বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর। তিনি স্ত্রী, এক মেয়েসহ আত্মীয়স্বজন রেখে যান। বরেণ্য সংগীত শিল্পী সুবীর নন্দী ১৯৫৩ সালের ১৯ নভেম্বর হবিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন।
সিএমএইচ-এ চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুবীর নন্দীর অবস্থার অবনতি হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে শিল্পীকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ভর্তির পর দুইদিনের মাথায় তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়। পরে সিঙ্গাপুর হাসপাতালে পর পর তিনবার শিল্পী হৃদরোগে আক্রান্ত হন। দেশের হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায়ও একবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন শিল্পী। সিঙ্গাপুর হাসপাতালের এমআইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন শিল্পী।
গত ৩০ এপ্রিল শিল্পীকে সিংগাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। এর আগে ঢাকায় সিএমএইচ’এ ১৮টি দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। ১২ এপ্রিল সিলেট থেকে ঢাকায় ফেরার পথে ট্রেনে অসুস্থ হয়ে পড়েন সুবীর নন্দী। ট্রেন থেকে নামিয়ে তাকে দ্রুত ঢাকার সিএমএইচে নিয়ে ভর্তি করা হয়। পরে তার অবস্থার অবনিত হলে শিল্পীকে আইসিইউতে রাখা হয়। সেখানে তিনি লাইফসাপোর্টে ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিডনি ও হার্টের অসুখে ভোগছিলেন।
শিল্পী সুবীর নন্দী আধুনিক গানসহ বিভিন্নঘরানার আড়াই হাজারেরও বেশি গান গেয়েছেন। বেতার, টিভি, চলচ্চিত্রে অসংখ্য গানে কন্ঠ দিয়েছেন। ১৯৮১ সালে তার প্রথম একক এ্যালবাম ‘ সুবীর নন্দীর গান ’ প্রকাশ পায়। চলচ্চিত্রে তিনি প্রথম গান করেন আবদুস সামাদ পরিচালিত ‘সূর্যগ্রহণ’ ছবিতে। সংগীতে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, একুশে পদকসহ অসংখ্য পুরস্কার লাভ করেন।