পরিস্হিতি২৪ডটকম : বিদেশি ক্রিকেটার কোটায় এসেছেন এক ঝাঁক তারকা ক্রিকেটার। স্টিভেন স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার, ক্রিস গেইল, এবি ডি ভিলিয়ার্স, অ্যালেক্স হেলসদের অংশগ্রহণে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ষষ্ঠ আসরকে এখন পর্যন্ত সেরা বলা হচ্ছে।
শুধু তারকা ক্রিকেটার নন এবার বিপিএলে ড্রোন ক্যামেরা, স্পাইডার ক্যাম যুক্ত হয়েছে। ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম প্রযুক্তিও (ডিআরএস) সংযোজন হয়েছে ষষ্ঠ আসরে। কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে ডিআরএস আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে। মন্থর উইকেট নিয়ে উচাটান থাকলেও অপূর্ণ ডিআরএস যেন হাসির খোরাক হয়ে যাচ্ছে টুর্নামেন্ট মাঠে গড়ানোর দুই দিনের মধ্যেই।
বিপিএলে এখন ব্যবহূত ডিআরএস প্রযুক্তিতে নেই স্নিকোমিটার, আল্ট্রাএজ প্রযুক্তি। যার ফলে রিভিউ নেওয়ার সুযোগ থাকলেও সেখানে খুব বেশি কিছু বোঝার উপায় নেই। খালি চোখে আম্পায়ারদের ভুল, সঠিক সিদ্ধান্তের কাছাকাছিই হচ্ছে রিভিউয়ের সিদ্ধান্ত। কারণ শুধু হক আই দিয়ে কট বিহাইন্ডসহ অনেক কিছুই স্পষ্ট হচ্ছে না। বল ব্যাট স্পর্শ করছে কিনা তা পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে না। থার্ড আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত নিয়েও তাই ধোঁয়াশা তৈরি হচ্ছে।
গতকাল যেমন ১৬ রান করে কুমিল্লার অধিনায়ক স্মিথ আউট হয়েছিলেন। আম্পায়ার আউট না দিলেও সিলেটের পেসার আল-আমিন, উইকেটকিপার লিটন দাস রিভিউ নিয়েছিলেন। কিন্তু ক্যামেরায় স্পষ্ট হলো না আদৌ বল ব্যাটে লেগেছিল কিনা। যদিও তাকে আউট দিয়েছিলেন আম্পায়ার। অবশ্য সেখানে মিশে ছিল অস্পষ্টতার হতাশা। টুর্নামেন্টের প্রথম দিনেও প্রযুক্তির পূর্ণতা না থাকায় থার্ড আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত দিতে সময় লেগেছে বেশি। এবং বলা বাহুল্য সেই সিদ্ধান্তে থেকে যাচ্ছে অসন্তোষ।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন গতকাল বলেছেন, বাংলাদেশের বর্তমান আর্থ-সামাজিক অবস্থান অনুযায়ী পূর্ণ ডিআরএস প্রযুক্তিই থাকা উচিত বিপিএলে। যদিও বিপিএল শুরুর আগেই দলগুলোকে বিসিবি জানিয়ে দিয়েছিল এমন অপূর্ণ ডিআরএসই থাকবে।
স্নিকোমিটার, আল্ট্রাএজ প্রযুক্তি আনার খরচ অনেক। সেটা সবারই জানা। আর টাকার অভাবেই আনা হয়নি পূর্ণ প্রযুক্তি! তাই এই প্রথম ডিআরএস চালু করলেও তার পূর্ণতা না থাকায় উল্টো সমালোচিত হচ্ছে বিসিবি। বিপিএল শুরুর পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে সর্বত্রই ডিআরএসের অপূর্ণতা নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।
গতকাল সিলেট সিক্সার্সকে চার উইকেট হারিয়ে বিপিএল শুরু করেছে কুমিল্লা। ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে দলটির কোচ সালাউদ্দিন ডিআরএস নিয়ে বলেছেন, ‘এটা নিয়ে আমাদের কথা হয়েছিল (টুর্নামেন্টের আগে)। কিন্তু এখানে আসলে স্নিকো ও আল্টা এজ আনতে অনেক টাকা লাগে। এটা হয়তো যারা করছে তারা সরবরাহ করেনি। এটা আমাদের সাথে আগেই কথা হয়েছে। এই কারণে আমাদের কিছু বলার নেই। শুধু হক-আই থাকবে, অন্যকিছু থাকবে না, এটা আমাদের সাথে আগেই কথা হয়েছে।’
তবে যেটুকু ডিআরএস প্রযুক্তি এখন ব্যবহার হচ্ছে তাতে কোনো দলের লাভ হচ্ছে না বলেই রায় দিলেন সালাউদ্দিন। তিনি বলেছেন, ‘আমরা বলেছিলাম, এটা থাকাতে খুব একটা যে লাভ হচ্ছে তা কিন্তু না। শুধু লেগ বিফরের ক্ষেত্রে হয়তো ঠিক সিদ্ধান্তটা আসছে, আর বাকিগুলোয় ডাউট থাকতেই হচ্ছে।’
আরো পড়ুন: মন্ত্রিসভা ভবিষ্যতে সম্প্রসারিত হতে পারে : ওবায়দুল কাদের
পাঁচ আসর শেষ হয়েছে বিপিএলের। বিসিবির কোষাগারও ফুলে-ফেঁপে উঠেছে গত কয়েক বছরে। ৫০০ কোটি টাকার এফডিআরই আছে বিসিবির। সালাউদ্দিন বলছেন, দেশের আর্থ সামাজিক অবস্থান অনুযায়ী ডিআরএসের সব প্রযুক্তিই থাকা উচিত। গতকাল তিনি বলেছেন, ‘আমার মনে হয় এখন যেই সময় এসেছে আমাদের, এগুলো আমাদের অবশ্যই থাকা উচিত। আমরা তো মধ্যম আয়ের দেশ হয়ে গেছি, এখন তো আসলে এগুলো থাকাই উচিত।’