পরিস্হিতি২৪ডটকম : অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা মানুষের মৌলিক অধিকার। জীবন ধারণের জন্য যেমনি খাদ্যগ্রহণের দরকার হয়, তেমনি সুস্থ সুন্দরভাবে বেঁচে থাকতে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ একান্তভাবে প্রয়োজন। আর এই চিকিৎসা পেশায় যাঁরা যুক্ত থাকেন তাঁরাই মহান ও মহৎ ব্যক্তি হিসেবে জনগণের কাছে প্রতীয়মান হয়। কেননা চিকিৎসার সাথে জড়িয়ে আছে সেবা নামক একটি শব্দ। চিকিৎসা আর দশটি পেশার মত নয়। নয় যে তা স্পষ্ট হয়েছে চিকিৎসার সঙ্গে সেবা যুক্ত হওয়ার মধ্যে দিয়ে। বলার অবকাশ থাকে যে, পৃথিবীজুড়ে এই চিকিৎসাসেবায় জড়িত আছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, জেনারেল ফিজিশিয়ান, সার্জন, পল্লী চিকিৎসক, প্রাথমিক দন্ত চিকিৎসক (পল্লী)। তবে তাঁদের মানও ভিন্ন ভিন্ন। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে নানান কারণে আজ আমাদের দেশে চিকিৎসা পেশার মতো এই মহান পেশাটি প্রশ্নবিদ্ধ। কেননা এক শ্রেণির মুষ্টিমেয় লোকেরা এই চিকিৎসা পেশায় জড়িতদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করেছে। বড় বড় ডিগ্রীধারীদের শুধু চিকিৎসক হিসেবে ভাবেন তাঁরা, অপরপে সমাজের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পল্লী চিকিৎসকগণ যাঁরা সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা দিতে রাত-বিরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এইসব পল্লী দন্ত চিকিৎসক ও পল্লী চিকিৎসকদের মর্যাদা দেওয়া দূরের কথা, নানান জুট-ঝামেলায় জড়িয়ে হেয়প্রতিপন্ন করছে, যা অতীব দুঃখজনক। অতীতে চিকিৎসাখাতের যে ভরাডুবি এবং জনগণের তুলনায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সংকটের মুহূর্তে পল্লী চিকিৎসকগণ সমাজের প্রতি স্তরে সাধারণ মানুষদের নানাভাবে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে এসেছেন। কিন্তু কখনো তাঁরা পাওয়া না-পাওয়া নিয়ে চিন্তা করেননি। রাত-বিরাতে এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্তে সেবাই দিয়ে গেছেন। কিন্তু বর্তমানে দেশে আগেকার চেয়ে বিশেষজ্ঞ প্রশিক্ষিত ডাক্তার বেড়েছে। বাড়েনি সেবার মান। এর ফলে একটা দেশের চিকিৎসাসেবা এভাবে তলানিতে গিয়ে ঠেকলে আর যা-ই হোক সেই দেশ বিশ্বসভায় মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না। বর্তমানে আমরা উন্নয়নশীল দেশ হয়ে উঠছি আর আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা দিনকে দিন কর্দমাক্ত হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন মানবতার মা শেখ হাসিনা এই ব্যাপারে কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন, যা এখন এই সময়ের আলোচিত দাবি। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘চিকিৎসকদের জন্য দু’বছর ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করতে হবে। এর মধ্যে এক বছর থাকতে হবে উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালে। প্রত্যেক সরকারি হাসপাতালে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু করে চিকিৎসকদের হাসপাতালে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। কেন কোনো এলাকার হাসপাতালে ডাক্তার থাকছেন না? তা সব জেলায় জরিপ চালিয়ে বের করতে হবে। যাঁরা সেবা দেবেন না, তাঁদের ওএসডি করে রাখতে হবে। কারণ, চিকিৎসকদের রাষ্ট্রীয় সম্মান দেয়া হয়েছে, তাঁদের অবশ্যই জনগণের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে চাকরি থেকে চলে যেতে হবে তাঁদের।’ প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনাকে আমরা অভিনন্দন জানাই। কারণ, সাধারণ মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে কঠোর হওয়ার বিকল্প সরকারের নেই। একজন এদেশের নাগরিক হিসেবে তাঁর এই মহতী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এ ক্ষেত্রে পল্লী দন্ত চিকিৎসক ও পল্লী চিকিৎসকগণ ভিন্নতর। কেননা দেশের প্রান্তিক জনপদসহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রোগীদের মধ্যে ৮৫% রোগীর চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন পল্লী দন্ত চিকিৎসক ও পল্লী চিকিৎসকগণ। আর ১৫% রোগী দেখেন বিশিষজ্ঞ চিকিৎসকগণ এবং তাঁরা কোন রকম সরকারি ভাতা গ্রহণ দুরের কথা রোগীরা সেবার বিনিময়ে নামমাত্র মূল্যে যে ফি দিয়ে থাকেন তা দিয়ে সন্তুষ্ট এবং ঐটাকা দিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবনযাপন করে। তাঁরা পায় না রাষ্ট্রীয় কোনো ভাতা ও সম্মাননা। যা তাঁদের আয় হয়, তাই দিয়েই নিজস্ব গণ্ডীর মধ্যে থেকে জীবনযাপন করেন। স্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের ভেঙে পড়া স্বাস্থ্যখাতকে পুনঃগঠনে স্বাধীন বাংলার স্বপ্নদ্রষ্টা, বাংলার স্থপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তিনি দেশের গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে মাত্র সাড়ে তিন বছরের শাসনে দেশের হাসপাতালসমূহে ডাক্তার, নার্স নিযোগ ও অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ ব্যাপক কর্মসূচী হাতে নিয়ে দেশের চিকিৎসাসেবাকে পুনরুজ্জীবিত করেন। ১৯৭৩ সালে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মাধ্যমে পূর্বে ১৯১৪-১৯৬৪ সালের লাইসেন্সশিয়েট্ অব মেডিকেল ফ্যাকাল্টি (এল.এম.এফ), মেম্বার অব মেডিকেল ফ্যাকাল্টি (এম.এম.এফ) চিকিৎসকগণকে কালিকুলাম অনুসারে বাংলাদেশে মধ্যম মানের ডি.এম.এফ চিকিৎসক তৈরি করার জন্য সরকারি ম্যাটস(MATS)তৈরি করেছিলেন। পূর্বের এল.এম.এফ, এম.এম.এফ সনদধারী চিকিৎসকগণকে কনডেন্সে এম.বি.বি.এস কোর্স করিয়ে স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে পদোন্নতির মাধ্যমে মহকুমা হাসপাতাল ও প্রশাসনে নিয়োগ দিয়েছিলেন। এ ধারাবাহিকতায় ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত ও উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা বিনির্মাণে বর্তমান সরকার যথাযথ মানসম্পন্ন আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে সরকারের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে কমিউনিটি ক্লিনিক একটি অগ্রাধিকারভিত্তিক প্রকল্প। দেশের উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে এই কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে স্বাস্থ্যসেবার সুফল পাচ্ছে জনগণ এবং জটিল দন্ত রোগীদের ক্ষেত্রে সঠিক পরামর্শের মাধ্যমে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ডেন্টাল সার্জন, ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতাল, বিভিন্ন বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, বিশেষজ্ঞ ডেন্টাল চিকিৎসকের নিকট পাঠানোর ক্ষেত্রেও প্রাথমিক (পল্লী) দন্ত চিকিৎসকগণ স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নের পাশাপাশি গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর নিকট আস্থার প্রতীক হিসাবে বিবেচিত। বৃহত্তর এ অবহেলিত প্রাথমিক দন্ত চিকিৎসকগণের প্রয়োজন ও গুরুত্ব অনুধাবন করে তৎকালীন সরকার ১৯৮০ সালে মহান জাতীয় সংসদে রেজিষ্ট্রেশন প্রদানে আইন পাশ করা হয়। এর প্রেক্ষিতে ১৯৮২ সালে পরীক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল ২৭৯ জন প্রাথমিক দন্ত (পল্লী) চিকিৎসককে রেজিষ্ট্রেশনও প্রদান করেন। পরবর্তীতে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য প্রাথমিক দন্ত (পল্লী) চিকিৎসকদের ১৯৯০ ও ১৯৯৭ সালে দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলে প্রাথমিক দন্ত (পল্লী) চিকিৎসকগণ সকল শর্তাদি পূরণ করে আবেদনপত্র দাখিল করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুইবার পরীক্ষার জন্য ডাকা হলেও অনিবার্য কারণ দেখিয়ে অদৃশ্য কারণে পরবর্তীতে দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। যা বৃহত্তর এ চিকিৎসক জনগোষ্ঠীকে হতাশ করে। কিন্তু প্রাথমিক দন্ত চিকিৎসকগণের মান উন্নয়ন ও দাবি আদায় না হলেও সাধারণ জনগোষ্ঠীর চিকিৎসাসেবা অব্যাহত রেখে সাধারণ জনগোষ্ঠীর সুখ দুঃখের সাথে থাকার পাশাপাশি সরকারের ঘোষিত স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়. বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল এ্যাক্ট- ১৯৮০ বাতিল করে, প্রণীত বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল এ্যাক্ট ২০১০ এ কোন ক্যাটাগরিতে প্রাথমিক দন্ত চিকিৎসকদের অন্তর্ভুক্ত না করে বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল এ্যাক্ট- ২০১০ প্রণীত হয়। প্রণীত উক্ত আইনের ধারা ২২ এর (১) ও (২) বলা হয়: ২২ (১) অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন নিবন্ধনব্যতীত কোন মেডিকেল চিকিৎসক বা ডেন্টাল চিকিৎসক এলোপ্যাথি চিকিৎসা করিতে অথবা নিজেকে মেডিকেল চিকিৎসক বা ত্রেমত ডেন্টাল চিকিৎসক বলিয়া পরিচয় প্রদান করিতে পারিবেন না। (২) কোন ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ এবং তিনি ৩ (তিন) বৎসর কারাদণ্ড অথবা ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন। বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল এ্যাক্ট- ২০১০ প্রণীত আইনের ধারা ২২ এর (১) ও (২) এর কার্যকারিতার ফলে অর্ধলক্ষেরও অধিক প্রাথমিক (পল্লী) দন্ত চিকিৎসকদের প্রশাসনিক হয়রানি, সামাজিক হেয়প্রতিপন্ন ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। বৃহত্তর এ প্রাথমিক (পল্লী) দন্ত চিকিৎসকদের পেশায় ব্যাঘাত সৃষ্টির কারণে পরিবারে নেমে আসে অন্ধকার ও আর্থিক দৈন্যদশা। একটি শ্রেণীর নেতিবাচক প্রচারণার ফলে নানাভাবে সমাজে অবহেলার স্বীকারও হতে হচ্ছে সরকারের ঘোষিত ও পরিকল্পিত চিকিৎসা ব্যবস্থায় অবদান রাখা প্রাথমিক (পল্লী) দন্ত চিকিৎসকদের। সন্তানদের শিক্ষা, চিকিৎসা, অন্ন, বস্ত্র ও মানসম্মত বাসস্থানের লাগাম টানতে পেশাগত সমস্যা সৃষ্টির ফলে সুস্থ জীবনে বেগ পেতে হচ্ছে। উল্লেখ্য যে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ব্যক্তিগত চিকিৎসক, বাংলাদেশ পোষ্ট গ্রেজুয়েট মেডিকেল শিক্ষার জনক, নন্দিত চিকিৎসক ও দেশে বেসরকারি খাতে প্রথম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ইউএসটিসির প্রতিষ্ঠাতা, জাতীয় অধ্যাপক (ডা.) নুুরুল ইসলাম দেশে স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে প্রাথমিক পল্লী চিকিৎসক ও প্রাথমিক (পল্লী) দন্ত চিকিৎসকদের বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট তুলে ধরেন। আমি দীর্ঘদিন চিকিৎসা পেশায় সম্পৃক্ত। একজন প্রাথমিক দন্ত চিকিৎসক হয়ে সাধারণ মানুষের সেবায় নিজেকে ব্রত রেখে পথ চলছি। যুক্ত আছি বৃহত্তর চট্টগ্রাম ডেন্টাল এসোসিয়েশনের সভাপতি পদে। অনেক চড়াই উতরাই পেরিয়ে এই পেশায় টিকে আছি। আমাদেরকে চিকিৎসক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে আমরা সাবেক মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সাথে পল্লী দন্ত চিকিৎসক ও পল্লী চিকিৎসকদের সুবিধা অসুবিধা নিয়ে মতবিনিময় করার সুযোগ আমার হয়েছে। মতবিনিময়কালে তিনি বলেছিলেন, শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় এসে মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে স্বাস্থ্যবান্ধব কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সরকারের স্বাস্থ্যনীতি বাস্তবায়নের ফলে স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ পাচ্ছে সাধারণ জনগণ এবং সকল জনগোষ্ঠীও শহরের স্বাস্থ্যসেবার সমান সুযোগসুবিধা পাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকারের এই কর্মসূচি সফল করতে এবং পরিকল্পিত আধুনিক ডিজিটাল স্বাস্থ্যনীতি বাস্তবায়নে পেশাজীবী চিকিৎসকদের পাশাপাশি ডিপ্লোমা ডেন্টিস্ট, পল্লী চিকিৎসক, পল্লী দন্ত চিকিৎসকদের এগিয়ে আসতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশ প্যারামেডিকেল শিাবোর্ড গঠনের জন্য ‘বাংলাদেশ প্যারামেডিকেল শিক্ষাবোর্ড আইন-২০১৫’ এর খসড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে এবং ঐ বছর ১০ আগস্ট ‘বাংলাদেশ প্যারামেডিকেল শিক্ষাবোর্ড আইন ২০১৬’ এর খসড়া চূড়ান্ত করতে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত আইনে ১৯৮৯ সালের প্যারামেডিকেল নাম বিলুপ্ত করে ‘ডিপ্লোমা মেডিকেল শিক্ষা বোর্ড’ গঠনে আন্তঃমন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সিদ্ধান্ত হয়। অনুষ্টেয় ঐ সভায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় ডিপ্লোমা মেডিকেল টেকনোলজি, ডেন্টিষ্ট্রি, ফার্মেসী ও ১১ (এগার)টি ডিপ্লোমা কোর্স, ৩ (তিন)টি সার্টিফিকেট কোর্সসহ এ আইনে এ ধরনের আরও কোর্স অন্তর্ভুক্তের সুযোগ রয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসক জনগোষ্ঠীর ভাগ্য ও জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে এ ডিপ্লোমা মেডিকেল বোর্ড গঠনপূর্বক প্রাথমিক দন্ত (পল্লী) চিকিৎসকদের যুগোপযোগী প্রশিণের মাধ্যমে তৃণমূল মানুষের স্বাধীনভাবে প্রাথমিক দন্ত চিকিৎসা সেবা প্রদানে সুযোগ দানের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট চট্টগ্রাম প্রাথমিক দন্ত চিকিৎসক কল্যাণ সমবায় সমিতি লি. (রেজি নং ১২৪১৭) (স্মারক নং ৭৫১) ও “বৃহত্তর চট্টগ্রাম ডেন্টাল এসোসিয়েশন” (স্মারক নং ৭৫০) স্মারকলিপি প্রদান করে এবং উক্ত স্মারকলিপির অনুলিপি মাননীয় মন্ত্রী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা; মাননীয় সচিব, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা; মাননীয় মহা-পরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মহাখালী, ঢাকা; মাননীয় জেলা প্রশাসক, চট্টগ্রাম বরাবরে প্রেরণ করে। বর্তমানে আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী মানবতার মা দেশরত্ন শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের এই দেশে আশ্রয় দিয়ে থাকা-খাওয়ার সুযোগসহ সমস্ত সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়ে এই দেশে আশ্রয় দিয়েছেন। এটা একটা মহানুভবতা। কিন্তু আমরা যাঁরা পল্লী দন্ত চিকিৎসক ও পল্লী চিকিৎসক হিসেবে আছি, সকলেই এ দেশের নাগরিক। এই দেশে আমরা আমাদের পেশার স্বীকৃতি নিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানসম্মানে বাঁচতে চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী ইশতেহারে ছিল, দেশের প্রতিটি ঘর ঘর থেকে একজন করে চাকরির ব্যবস্থা করা হবে। এবং ভিশন ২০৪১-এ উল্লেখ করা হয় যে, একজনও এদেশে বেকার থাকবে না। এটা আমাদের দেশের জন্য অনেক মাইলফলক দৃষ্টান্ত। আমরা এই খবরে অত্যন্ত আনন্দিত-আপ্লুত। বর্তমানে আমাদের চাওয়া, যারা পুরাতন পল্লী দন্ত চিকিৎসক ও পল্লী চিকিৎসক আছেন তাঁদেরকে আইনী প্রক্রিয়ায় যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ দেওয়া হোক। আগামী ১৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মুজিববর্ষ শুরু হচ্ছে। সরকার ২০২০-২০২১ সালকে মুজিববর্ষ ঘোষণা দিয়েছে। জাতির জনকের স্বপ্ন ছিল এ দেশের প্রতিটি মানুষ যেন স্বাবলম্বী হয় এবং অর্থনৈতিকভাবে মুক্তি লাভ করে। বঙ্গবন্ধু দেশ গঠনের পরপরই পল্লী চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে সম্মানিত করেছিলেন। এই মুজিববর্ষে আমাদের প্রত্যাশা, এই দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পল্লী দন্ত চিকিৎসক ও পল্লী চিকিৎসকদের পেশার ন্যূনতম স্বীকৃতি দিয়ে পেশার মান রক্ষা করা হোক এবং মুজিববর্ষে পল্লী দন্ত চিকিৎসক ও পল্লী চিকিৎসক সেরা উপহার হোক তাঁদের পেশার মানরা ও স্বীকৃতি।
লেখক : প্রবন্ধিক, কলামিষ্ট ও সভাপতি, বৃহত্তর চট্টগ্রাম ডেন্টাল এসোসিয়েশন।