পরিস্হিতি২৪ডটকম : অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ৩০ বছরের ইতিহাসে প্রথম টেস্ট সিরিজ জয়ের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে হলে দিবা-রাত্রির প্রথম টেস্টে যে খুব দ্রুতই মানিয়ে নিতে হবে সেটি জানেন কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। চলতি সপ্তাহেই শুরু হতে যাচ্ছে প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যকার তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। কোনো প্রস্তুতি ম্যাচ ছাড়াই পার্থে প্রথম টেস্টে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে সফরকারী নিউজিল্যান্ড। এ সময় সেখানকার তাপমাত্রা থাকবে ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এর পরেই সিডনিতে বক্সিং ডে টেস্টে মুখোমুখি হবে এই দুই দল।
গত সপ্তাহে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে নিউজিল্যান্ড। তবে সেটি ছিল নিজ মাঠের মন্থর ও চেনা পরিবেশে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় ফ্লাড লাইটে গোলাপী বলের জন্য আরো পেস সহায়ক উইকেট থাকবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। সর্বশেষ আনুমানিক দুই বছর আগে দিবা-রাত্রির টেস্ট খেলেছে নিউজিল্যান্ড। অকল্যান্ডের ওই ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল ইংল্যান্ড। অপরদিকে এডিলেডে গত সপ্তাহে পাকিস্তানের বিপক্ষে দিবা-রাত্রির টেস্টের তরতাজা অভিজ্ঞতা রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার। ম্যাচে সফরকারী পাকিস্তানকে ইনিংস ও ৪৮ রানে হারায় তারা।
নিউজিল্যান্ডের রান মেশিন খ্যাত অধিনায়ক উইলিয়ামসন সাংবাদিকদের বলেন, ‘দিবা-রাত্রির টেস্টটি আকর্ষণীয় হবে। আমার মনে হয় এটি শুধুমাত্র মানিয়ে নেবার আরেকটি দিক। এখানে শুধু এইটুকুই ব্যতিক্রম, অনুশীলন ছাড়াই আমরা এ ম্যাচে মাঠে নামছি।আর সঠিক অনুশীলন? এটির সঠিক পরিমাপ করাটা সবসময় কঠিন।’
এদিকে নিউজিল্যান্ড দলের জন্য কয়েকটি সুখবর রয়েছে। এর একটি হচ্ছে তাদের অল রাউন্ডার কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম ফিটনেস ফিরে পেয়েছেন। গত মাসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের জন্য অনুশীলনের সময় পেটের পেশীর টান-জনিত ইনজুরিতে পড়েছিলেন তিনি। আর সাইড স্ট্রেনের ইনজুরির কারণে ইংলিশদের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নিতে ব্যর্থ হওয়া বোলার ট্রেন্ট বোল্ট সুস্থ হয়ে উঠেছেন অস্ট্রেলিয়াগামী বিমানে। পার্থে পেস ও বাউন্স দিয়ে দলকে ম্যাচ জিতিয়ে দেয়ার মত সম্ভাব্য অবস্থান ফিরে পেয়েছেন তিনি।
অস্ট্রেলিয়ার বোলিং ত্রয়ী মিশেল স্টার্ক, জস হ্যাজেলউড ও প্যাট কামিন্স এই ম্যাচেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। তবে কিউই ওপেনার টম লাথাম বলেছেন, স্বাগতিকদের সেরা বোলিং মোকাবেলায় ভীত নয় তার দল। তিনি বলেন, ‘আমি এটি বলব না যে তাদের দমন করব। কিন্তু এটি আমাদের জন্য হতে পারে একটি রোমাঞ্চকর সুযোগ। আমরা ভাগ্যবান এই কারণে যে, এর আগেও তাদের সঙ্গে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই জানি তারা কি করতে চায়।’
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে টিম পাইনের দলটি অনেক বেশি ধারাবাহিকতার প্রমাণ দিয়ে যাচ্ছে। ইংল্যান্ডে স্বাগতিকদের সঙ্গে ২-২ ম্যাচে ড্র করে ধরে রেখেছে অ্যাশেজ শিরোপা। এরপর পাকিস্তানকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজ নিশ্চিত করে নিজেদের মাটিতে। এডিলেডে অপরাজিত ৩৩৫ রান সংগ্রহ করে ডেভিড ওয়ার্নার প্রমাণ করেছেন যে তিনি ফর্মের চূড়ান্ত অবস্থানে রয়েছেন। তৃতীয় নাম্বারের ব্যাটসম্যান মার্নাস লাবুশেন টানা দুই ম্যাচে হাঁকিয়েছেন শতক। একই সঙ্গে সতীর্থ ব্যাটিং পাওয়ারহাউজ স্টিভ স্মিথ আছেন আলোচনার কেন্দ্রে। আর বিপদজনক মনে করা হয় উইলিয়ামসন ও বোল্টকে।
অস্ট্রেলিয়া স্কোয়াড (সম্ভাব্য): টিম পাইন (অধিনায়ক), জো বার্নস, প্যাট কামিন্স, জস হ্যাজেলউড, ট্রাভিস হেড, মার্নাস লাবুশেন, নাথান লিয়ঁ, মাইকেল নেসের, জেমস প্যাটিনসন, স্টিভ স্মিথ, মিশেল স্টার্ক, ম্যাথ্যু ওয়েড ও ডেভিড ওয়ার্নার।
নিউজিল্যান্ড স্কোয়াড (সম্ভাব্য): কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), টড এ্যাস্টল, টম ব্লান্ডেল, ট্রেন্ট বোল্ট, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম, লোকি ফার্গুসন, ম্যাট হ্যানরি, টম লাথাম, হেনরি নিকোলস, জিত রাভাল, মিচেল স্যান্টনার, টিম সাউদি, রস টেইলর, নেইল ওয়াগনার ও বিজে ওয়াটলিং।