পরিস্হিতি২৪ডটকম : শনিবার (২ মার্চ) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে ‘চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন ও চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ড’ বিষয়ক মতবিনিময় সভায় কর্ণফুলী নদীসহ আশপাশের ৫৭টি খালের দূষণ ও নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে মাস্টার প্ল্যান প্রণয়নের কাজ শুরু করা হয়েছে জানিয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন। এসময়ে তিনি বলেন,এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তুরাগ, বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা ও কর্ণফুলীসহ সব নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা ও দূষণ রোধে মাস্টার প্ল্যান করা হচ্ছে। শিগগিরই মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নে কমিটির সদস্যরা কাজ শুরু করবেন।
মন্ত্রী বলেন, কর্ণফুলীর পারে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে কর্ণফুলীর সঙ্গে যুক্ত ৫৭টি খালের নাব্যতা ফিরিয়ে আনারও কাজ চলছে।
তিনি বলেন, মন্ত্রীসভার প্রতিটি সদস্য দেশের উন্নয়নে অঙ্গীকারাবদ্ধ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলার মানুষের স্বপ্ন পূরণের জন্য আমরা অঙ্গীকার করেছি। সেই স্বপ্ন পূরণে আমরা ইতোমধ্যে কাজও আরম্ভ করে দিয়েছি। আশা করি এর সুফল জনগণ পাবে।
মো. তাজুল ইসলাম বলেন, জাতির জনক আমাদের সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন পূরণ করতে দেওয়া হয়নি। অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও তার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা আবার উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশীরা এখন ভিক্ষুকের জাতি নয়, মিসকিনের জাতি নয়। উন্নয়নশীল দেশের কাতারে আমরা স্থান করে নিয়েছি।
মন্ত্রী বলেন, এখানে যারা বসে আছি আমরা প্রত্যেকেই ভিন্ন ভিন্ন মানুষ। ভিন্ন ভিন্ন মত থাকাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য হলো একটা। সেই লক্ষ্যটা হলো- চট্টগ্রামের উন্নয়ন করা। চট্টগ্রামকে দৃষ্টিনন্দন করা। চট্টগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরী নেতৃত্বে চট্টগ্রাম ছিলো বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর শহর।
আশা করি তার অনুজ সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম আরও সুন্দর হবে। আরও দৃষ্টিনন্দন হবে।
মো. তাজুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রামবাসীর পাশে প্রধানমন্ত্রী আছেন। এ কারণে চট্টগ্রামের প্রতিটি প্রকল্প তিনি পাশ করিয়ে দেন। চট্টগ্রামের একটি উন্নয়ন প্রকল্পও তিনি বাদ দেননি। গত একনেকের সভায়ও চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিয়ে হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প তিনি অনুমোদন দিয়েছেন। সবাই সম্মিলিতভাবে কাজ করলে চট্টগ্রাম দ্রুত এগিয়ে যাবে। দেশেরও উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ১৮ জুলাই পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশের এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট কর্ণফুলী নদী দখল, মাটি ভরাট ও নদীতে সব ধরনের স্থাপনা নির্মাণ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল। হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৫ সালে আর এস অনুযায়ী কর্ণফুলী নদীর দুইপাড়ে ২১৮১টি অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করেছিল চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
২০১৬ সালের ১৬ অগাস্ট হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ কর্ণফুলীর দুই তীরে গড়ে ওঠা স্থাপনা সরাতে ৯০ দিনের সময় বেধে দিয়েছিল। তবে উচ্ছেদ শুরু হয় প্রায় আড়াই বছর পর, যা আবারও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।