পরিস্হিতি২৪ডটকম : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় এসে চট্টগ্রামের সব প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চট্টগ্রামের লালদীঘিতে আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের প্রার্থীদের পরিচিতি জনসভায় বক্তব্যকালে তিনি এ ঘোষণা দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার হয়ে ঘুনধুম পর্যন্ত রেললাইনের কাজ শুরু করেছি। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম বুলেট ট্রেন চালু করা হবে যাতে দ্রুত মানুষ যাতায়াত করতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘রাস্তা-ঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম চারলেন রাস্তা করে দিয়েছি। চট্টগ্রামে প্রথম আন্তর্জাতিক মানের এয়ারপোর্ট করে দিয়েছিলাম। এয়ারপোর্টের উন্নয়ন করবো। শুধু চট্টগ্রাম মহানগর নয় পুরো চট্টগ্রামের ব্যাপক উন্নয়ন পরিকল্পনা আমরা হাতে নিয়েছি। পোর্টের উন্নয়ন কাজ করেছি। বে-টার্মিনাল নির্মাণের কাজ হাতে নিয়েছি। আর এসব উন্নয়নকাজ করতে হলে আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় আনতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছি, সে বিচারের রায় আমরা কার্যকর করেছি, সেই সঙ্গে বাংলাদেশ অভিশাপমুক্ত হয়েছে, বাংলাদেশের উন্নয়ন গতিধারা এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নত সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়তে হবে।’
তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালে ক্ষমতায় এসে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। আমরা দিন বদলের সনদ দিয়েছিলাম। আজ দেশের মানুষের জীবনমান বদলে গেছে, মানুষ এখন দারিদ্র্যের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ সবার কাছে দৃশ্যমান। আজকে সবার কাছে মোবাইল ফোন, সবাই ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন, অনলাইনে কেনাবেচা হচ্ছে, অনলাইনে অনেক সেবা পাচ্ছেন। আমরা বিভিন্ন জায়গায় ডিজিটাল সেন্টার করে দিয়েছি, তার মাধ্যমে সহযোগিতা পাচ্ছেন। এটা আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আছে বলেই সম্ভব হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের অফিস করে দিয়েছি যাতে অগ্নি নির্বাপণের ব্যবস্থা হয়। মিরসরাইয়ে বিশাল জায়গায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিয়েছি, সেখানে একটি ইপিজেডও হচ্ছে। সমগ্র চট্টগ্রামে ব্যাপক উন্নয়নকাজ হচ্ছে।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘যারা লুটেরা, দুর্নীতিবাজ, এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করে, মানি লন্ডারিং করে, দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারি করতে গিয়ে ধরা খেয়ে সাজাপ্রাপ্ত, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার দায়ে যারা সাজাপ্রাপ্ত, এই বিএনপি-জামায়াত জোট যেন আর ক্ষমতায় আসতে না পারে।’
তিনি বলেন, ‘দরকার হচ্ছে গণতন্ত্র ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখা, যে গণতন্ত্র আমরা প্রতিষ্ঠা করেছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘চট্টগ্রামবাসী সবসময় আওয়ামী লীগের পাশে আছে, আওয়ামী লীগের পাশে ছিল। আমি আশা করি আগামী নির্বাচনে চট্টগ্রামবাসী নৌকা্ মার্কায় ভোট দিয়ে তাদের সেবা করার সুযোগ দেবেন। প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার ভোটারদের কাছে আমি সেই আবেদন রাখছি। ইনশাআল্লাহ যে উন্নয়নের ধারা আমরা সূচনা করেছি, বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে।’
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কথা বলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) আসনের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনের প্রার্থী ড. হাছান মাহমুদ, চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী) আসনের প্রার্থী মইন উদ্দীন খান বাদল, নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী।
পরে চট্টগ্রামের ১৬ আসনে আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
এর আগে বক্তব্য রাখেন সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী) আসনের প্রার্থী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ সালাম ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনের প্রার্থী এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১০ (হালিশহর) আসনের প্রার্থী ডা. আফছারুল আমীন, চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনের প্রার্থী দিদারুল আলম, চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ) আসনের প্রার্থী নজরুল ইসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনের প্রার্থী নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা) আসনের প্রার্থী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের প্রার্থী সামশুল হক চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া) আসনের প্রার্থী ড. আবু রেজা নদভী, চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) আসনের প্রার্থী মাহফুজুর রহমান মিতা, চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর) আসনের প্রার্থী এমএ লতিফ, চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনের প্রার্থী ব্যারস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।