পরিস্হিতি২৪ডটকম/গাইবান্ধা প্রতিনিধি : আজ ১৪ ডিসেম্বর। শোকাবহ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। আমাদের জাতীয় জীবনে এক বেদনাঘন দিন। একাত্তরের ৯ মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর দেশ যখন স্বাধীনতার ঊষালগ্নে, ঠিক তখনই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর নরঘাতক হায়েনার দল রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও শান্তি কমিটির সদস্যরা মেতে ওঠে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নিধনযজ্ঞে। বাঙালি জাতিকে মেধা-মননশূন্য করতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাত্র দু’দিন আগে এই হত্যাযজ্ঞ চালায়। জাতি হারায় অসংখ্য মেধাবী সন্তানকে।
আজ ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে সারাদেশের মতো গাইবান্ধার দরিয়াপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে একইভাবে পালিত হয়েছে শহীদ বদ্ধিজীবী দিবস। এ দিবসকে ঘিরে গাইবান্ধা দারিয়াপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে এক আলোচনা সভার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে আলোচনা করেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তৌহিদুল ইসলাম খসরু। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, শিক্ষক বজলার রহমান বকুল, আতাউর রহমান, দারিয়াপুর জয়নাল আবেদীন প্রিপারেটরী স্কুলের পরিচালক ও অধ্যক্ষ, সাংবাদিক সুমন কুমার বর্মন প্রমুখ।
উক্ত আলোচনা সভায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে দরিয়াপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বক্তব্যে বলেন, ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। পৃথিবীর ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বাঙালি বুদ্ধিজীবী নিধন বাংলাদেশের ইতিহাসে নৃশংসতম ও বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞ। জাতি যখন বিজয়ের খুব কাছে সেই সময় পাকিস্তানি বাহিনীর সহযোগিতায় রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনী দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের ধরে ধরে হত্যা করে। ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড চালায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। বাঙালি শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, আইনজীবী, শিল্পী, দার্শনিক ও রাজনৈতিক চিন্তাবিদগণ এই সুপরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞের শিকার হন। তাই দিবসটি স্মরণে এই আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে।
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বরের হত্যাকাণ্ড ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে জঘন্যতম বর্বর ঘটনা। পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসররা পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞের পর ঢাকার মিরপুর, রায়েবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে বুদ্ধিজীবীদের লাশ ফেলে রাখে। ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পরপরই নিকট-আত্মীয়রা মিরপুর ও রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে স্বজনের লাশ খুঁজে পায়। বুদ্ধিজীবীদের নিথর দেহজুড়েই ছিল আঘাতের চিহ্ন, চোখ, হাত-পা বাঁধা, কারও কারও শরীরে একাধিক গুলি, অনেককে হত্যা করা হয়েছিল ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে। লাশের ক্ষতচিহ্নের কারণে অনেকেই তাদের প্রিয়জনের মৃতদেহ শনাক্তও করতে পারেননি।