পরিস্হিতি২৪ডটকম/মো:মির-হোসেন সরকার : শীতে কাঁপছে গাইবান্ধা। পৌষের শুরুতেই তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এখনও মাঘ মাসের হাড় কাঁপানো শীত তো আছেই। তাতেই হিমেল হাওয়া আর কনকনে ঠাণ্ডা বাতাসে ঝেঁকে বসেছে শীত। মানবেতর জীবনযাপন করছে উত্তরাঞ্চলের শীতার্ত মানুষ। সকালের দিকটায় লক্ষ্য করলে দেখা যায়, বৃষ্টির মতো ঝরছে শিশির। লোকজনের সরগম কমে গেছে রাস্তাঘাটসহ দোকনগুলোতে। ইতোমধ্যেই কনকনে হিমেল বাতাসের শীত থেকে বাঁচতে উপচে পড়া ভিড় শুরু করছে কাপড়ের দোকনগুলোতে। বিক্রেতারাও বেশি দামে বিক্রি করে চলেছে শীতের গরম কাপড়। ঘন কুয়াশায় রোদ স্বল্পতার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ফসলের ক্ষেত। সব মিলে জনজীবনের স্থবিরতায় ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
স্থানীয় লোকজন জানান, রাতভর ঝরছে শিশির। ধোঁয়ার মতো ঘন কুয়াশায় দিনের বেশির ভাগ সময় রোদ দেখা যাচ্ছে না। ফলে হাড় কাঁপানো তীব্র ঠাণ্ডা কাহিল করে ফেলেছে পুরো গাইবান্ধাবাসীকে। তবে শীতের দাপটে সাধারন মানুষের চেয়েও বেশি কাতর হয়ে পড়েছেন জেলার চরাঞ্চলসহ সাত উপজেলার হতদরিদ্র-ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষরা। গরম কাপড়ের অভাবে এসব মানুষের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। সাময়িকভাবে শীত নিবারণে খড়কুটোর আগুনই যেন তাদের একমাত্র ভরসা। তবে রাতের বেলায় বৃষ্টির মতো পড়তে থাকা কুয়াশার সঙ্গে হিমেল বাতাসে তাদের কষ্ট আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। মানবেতর জীবনযাপন করছে মানুষ।
আজ বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, আজকের সকালের তাপমাত্রা ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। উত্তরে বয়ে চলছে কনকনে হিমেল ঠাণ্ডা আবহাওয়া। সেই সঙ্গে হিমেল হাওয়ায় কাঁপতে দেখা গেছে মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীকেও। কুয়াশা আর ঠাণ্ডার কারণে প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া রাস্তাঘাটে লোকজনের আবাস খুব কম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সন্ধ্যার পর পরেই দোকান বন্ধ করে বাড়ির উদ্দেশ্যে ফিরছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে রাত ৮টার পরেই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে শহরসহ গ্রামাঞ্চচলের হাট-বাজার ও রাস্তা-ঘাট। ঘন কুয়াশার কারণে গতি কমে চলছে ছোট-বড় যানবাহনগুলো। এছাড়া শীতের তীব্রতায় বাড়ছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগের প্রকোপ। প্রতিদিন ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে হাসপাতালগুলোয় ভিড় করছে অনেক মানুষ। এসব রোগে আক্রান্তদের মধ্যে শিশু আর বৃদ্ধের সংখ্যাই বেশি।
এদিকে ঘন কুয়াশা ও ঠাণ্ডার কারণে বিরুপ প্রভাব পড়েছে কৃষিক্ষেত্রে। এরই মধ্যে লেট ব্রাস্ট রোগে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে আলুর ক্ষেত। বোরো ধানের বীজতলার চারাগুলো হলুদ হয়ে গেছে। এছাড়া সিম, কপিসহ বিভিন্ন শীতকালীন শাকসবজির ক্ষেতে রোগবালাইয়ের পাশাপাশি পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। জমিতে বিভিন্ন ধরনের ছত্রাকনাশক ওষুধ প্রয়োগ করেও প্রতিকার পাচ্ছেন না কৃষকরা। এতে করে ক্ষয়ক্ষতির শষ্কায় পড়েছেন জেলার সাত উপজেলার কৃষকরা। সাধারণ খেঁটে খাওয়া মানুষগুলোর আরও করুন অবস্থা। কাপড়ের দাম দিগুণ বৃদ্ধি হওয়ায় শীত নিবারণে খড়কুটোর আগুনই যেন তাদের একমাত্র ভরসা। খড়কুটোর আগুনই যেন তাদের কাছে এক একটা শীত নিবরণের পোশাকের থেকেও বড় কিছু।
কাপড়ের দাম দিগুণ হওয়ায় দরিদ্র ও সাধারন খেঁটে মানুষদের শীত নিবরণের ব্যবস্থা কতটুকু এবং এখন পর্যন্ত কত কম্বল বিরতণ হয়েছে এ সম্পর্কে গাইবান্ধা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা এ কে এম ইদ্রিশ আলীর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি পরিস্থিত২৪ডটকমের গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি বলেন, এ পর্যন্ত আমরা জেলায় ৫১ হাজার ৮শ শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে তাতেই আমরা পরিপূর্ণ করতে পেরেছি।