পরিস্হিতি২৪ডটকম : তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালন না করার অর্থ দেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করার শামিল।
তিনি বলেন, ‘সমগ্র জাতি ৭ মার্চ পালন করলেও বিএনপিসহ কয়েকটি দল এটি পালন করে না, তারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই ভাষণকে স্বীকৃতি দিতে পারেনি।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘৭ মার্চের ভাষণ কোনো দলের নয়, সমগ্র জাতির। ইউনেস্কো এই ভাষণকে বিশ্ব প্রামান্য ঐতিহ্যের দলিল হিসেবে ঘোষণা এবং স্বীকৃতি দিয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর দ্বারপ্রান্তে বিএনপি ভুলের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসবে এবং ভবিষ্যতে ৭ মার্চ পালন করবে। তাহলে দেশের মানুষ তাদেরকে বাহবা দেবে।’
শনিবার রাজধানীর তথ্য ভবন মিলনায়তনে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর (ডিএফপি) আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রদত্ত ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ বিশ্ব প্রামান্য ঐতিহ্য আলোচনা সভা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) স. ম. গোলাম কিবরিয়ার সভাপতিত্বে সভায় তথ্যসচিব কামরুন নাহার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চে জাতির পিতার ঐতিহাসিক ভাষণ ধারনকারী দলের সদস্যদের মধ্যে স্মৃতিচারন করেন, আমজাদ আলী খন্দকার ও সৈয়দ মইনুল আহসান। পরে ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ধারনকারী ৮ সদস্যদের মধ্যে পদক প্রদান করেন তথ্যমন্ত্রী। এর মধ্যে আমজাদ আলী খন্দকার ও সৈয়দ মইনুল আহসান সরাসরি এবং অন্যান্যদের পরিবারের সদস্যরা হাছান মাহমুদের হাত থেকে পদক গ্রহণ করেন।
মন্ত্রী বলেন, আমজাদ আলী খন্দকার ও সৈয়দ মইনুল আহসানসহ সেদিন তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বঙ্গন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ সংরক্ষণ করেছিলেন। সে কারণে তাদের নাম ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
হাছান মাহমুদ বলেন, একাত্তরের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণে বাঙালির রক্তে আগুন ধরিয়েছিল। এই ভাষণ নিরস্ত্র জাতিকে স্বশস্ত্র জাতিতে পরিণত করেছিল। এই ভাষণের পরেই স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। এই দিনে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেছিলেন ‘তোমাদের যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো। শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। এই কথার মধ্যদিয়ে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক নয়, কার্যত স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু এমনভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন যাতে করে পাকিস্তানিরা বঙ্গবন্ধুকে বিদ্রোহী হিসেবে বলতে না পারে । আবার স্বাধীনতার ডাকও তিনি দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণের পরেই বাঙালি স্বশস্ত্র সংগ্রামের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিল।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর যে মুন্সিয়ানা তা তার বক্তৃতা ও কথার মাধ্যমে ফুটে উঠেছিল। সেই কারণে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ভাষণ। গননা করা হলে ৭ মার্চের ভাষণই হবে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি শোনা ভাষণ। এই ভাষণ এমন একটি ভাষণ যেটি মানুষকে থমকে দেয় এবং শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত না শুনলে অপুর্ণতা থেকে যায়।