আগামীকাল চট্টল গৌরব মহাকবি নবীনচন্দ্র সেনের ১১১ তম প্রয়ান দিবস

পরিস্হিতি২৪ডটকম : আগামীকাল ২৩ জানুয়ারী ২০২০ চট্টলার গৌরব মহাকবি নবীনচন্দ্র সেনের ১১১ তম প্রয়ান দিবস। দিবসটি পালনে চট্টগ্রাম ইতিহাস চর্চা কেন্দ্রের পক্ষে বিশেষ আয়োজন করা হয়েছে। ২৩ জানুয়ারী সকালে রাউজানে মহাকবির ভাস্কর্যে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। ঐদিন বিকেলে চট্টগ্রাম শহরে শহীদ মিনার সংলগ্ন মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। (জন্ম: ১০ ফেব্রুয়ারি, ১৮৪৭- মৃত্যু:২৩ জানুয়ারি, ১৯০৯) বাংলা সাহিত্যের একজন উল্লেখযোগ্য কবি। উল্লেখ্য যে, নবীনচন্দ্র সেন ১০ ফেব্রুয়ারি ১৮৪৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ২৩ জানুয়ারী ১৯০৯ সালে মারা যান।তাঁর পিতার নাম গোপীমোহন রায় এবং মাতার নাম রাজরাজেশ্বরী। পাঁচবছর বয়সে কবি লেখাপড়া শুরু করেন। ১৮৬৩ সালে তিনি চট্টগ্রাম স্কুল (বর্তমানে চট্টগ্র্রাম কলেজিয়েট স্কুল) থেকে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হন। এরপর উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি কলকাতা যান। ১৮৬৫ সালে তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ (বর্তমান প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে দ্বিতীয় বিভাগে এফএ এবং জেনারেল অ্যাসেমব্লিজ ইন্সটিটিউশন (স্কটিশচার্চ কলেজ) থেকে ১৮৬৯ সালে বিএ পাশ করেন। নবীন সেন বি.এ. পাশ করার পরে প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যক্ষ সার্টিক্লফ এর সুপারিশে নবীনচন্দ্র কলকাতার বিখ্যাত হেয়ার স্কুলে তৃতীয় শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ পান। পরে ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট নিয়োগের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হন। মাত্র একুশ বছর বয়সে তিনি কর্মজীবনে প্রতিষ্ঠিত হন। প্রথমে ১৭ জুলাই ১৮৬৮ বেঙ্গল সেক্রেটারীয়েটের এসিষ্ট্যাণ্ট পদে যোগ দেন। ২৪ জুলাই ১৮৬৯ যশোরে ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর পদে তাকে পদায়ন করা হয়। কর্মজীবনে তিনি বাংলা, বিহার, ত্রিপুরার অনেকস্থানে দতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি দুই দফায় মোট প্রায় আটবছর ফেনীতে ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এসময় তিনি অনন্য কর্মদতায় একটি জঙ্গলাকীর্ণ স্থানকে মনোরম শহরে পরিণত করেন। ১৮৮৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ফেনী হাই স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। যা বর্তমানে ফেনী সরকারি পাইলট হাই স্কুল। প্রায় ছত্রিশ বছর সরকারি চাকুরি করার পরে ১ জুলাই ১৯০৪ অবসর গ্রহণ করেন। নবীনচন্দ্রের প্রথম কবিতা কোন এক বিধবা কামিনীর প্রতি প্রকাশিত হয় তৎকালীন অন্যতম খ্যাতনামা পত্রিকা এডুকেশন গেজেট-এ, যখন তিনি এফ.এ (বর্তমান উচ্চ মাধ্যমিক) শ্রেণীর ছাত্র। তার প্রথম বই “অবকাশরঞ্জিনী”র প্রথম ভাগ প্রকাশিত হয় ১২৭৮ বঙ্গাব্দের পহেলা বৈশাখ এবং এর দ্বিতীয় খন্ড প্রকাশিত হয় ২৯ জানুয়ারি, ১৮৭৮। শেষের কাব্য তিনটি (রৈবতক, কুরুত্রে, প্রভাস) আসলে একটি বিরাট কাব্যের তিনটি স্বতন্ত্র অংশ। এই কাব্য তিনটিতে কৃষ্ণচরিত্রকে কবি বিচিত্র কল্পণায় নতুনভাবে ফুটিয়ে তুলেছিলেন। কবির মতে আর্য ও অনার্য সংস্কৃতির সংঘর্ষের ফলে কুরুত্রেযুদ্ধ হয়েছিল। এবং আর্য অনার্য দুই সম্প্রদায়কে মিলিত করে শ্রীকৃষ্ণ প্রেমরাজ্য স্থাপন করেছিলেন। নবীনচন্দ্র ভগবতগীতা এবং মার্কণ্ডেয়-চণ্ডীরও পদ্যানুবাদ করেছিলেন। নবীনচন্দ্রের কবিত্ব জায়গায় জায়গায় চমৎকার কিন্তু কবি এই চমৎকারিত্ব সব জায়গায় বজায় রাখতে পারেন নি। এই কারণে এবং কাব্য বাঁধুনি না থাকায় নবীনচন্দ্রের কবিত্বের ঠিকমত বিচার করা কঠিন হয়ে পড়েছে। নবীনচন্দ্র কিছু গদ্যরচনাও করেছিলেন। তার আত্মকথা আমার জীবন একটি উপন্যাসের মত সুখপাঠ্য গ্রন্থ। তিনি ভানুমতী নামে একটি উপন্যাসও রচনা করেছিলেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি