বাংলাদেশ, , শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

সুফিবাদের প্রধান প্রত্যাশা হলো পরম স্রষ্টার সানিধ্য লাভে ধন্য হওয়া

  প্রকাশ : ২০১৯-০২-১৬ ১৯:৫৮:২৭  

আন্তর্জাতিক সুফি কনফারেন্সে বক্তরা : সুফিবাদের প্রধান প্রত্যাশা হলো পরম স্রষ্টার সানিধ্য লাভে ধন্য হওয়া

পরিস্হিতি২৪ডটকম : আনজুমানে জাহাঁগীরীয়া শাহসুফি মমতাজিয়া ট্রাস্টের আয়োজনে সুফিবাদ বিষয়ক আন্তর্জাতিক কনফারেন্স ডিআরআই স্বাধীনতা হল মিলনায়তনে ১৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ট্রাস্টের নিবার্হী পরিচালক পীরজাদা মাওলানা মতিমিয়া মনসুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারত বর্ষ থেকে আগত আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান সুফিব্যক্তিত্ব হযরত প্রফেসর ড. সাইয়েদ শামীম উদ্দিন আহমেদ মুনায়েমী (মু: জি: আ:)। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সাইয়েদ আবদুল্লা আল মারুপ, বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ছাহেবজাদা মাওলানা আহসান আলি (মু: জি: আ:), প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা গোলাম কিবরিয়া আল আজহারী, কবি অনুবাদক মাহমুদুল হাসান নিজামী, ইতিহাসবিদ সোহেল মোহাম্মদ ফখরুদ-দীন, প্রখ্যাত গবেষক ড. এম এ মুক্তাদীর, ইসলামী চিন্তাবিদ প্রভাষক মুহাম্মদ রেজাউল করিম, কনফারন্স পরিচালনা করেন মোরশেদ আলী তুহিন। কনফারেন্সে বক্তারা বলেছেন, সুফিবাদ শান্তির ঠিকানা। ইসলাম শান্তির পইে। প্রিয় নবী (সা:) এর শিক্ষা ছিলো মানবতা ও মানুষের কল্যানের জন্য নিবেদিত। বক্তারা আরো বলেছেন, সুফিগনের চলা এ প্রত্যাশার চূড়ায় উপনীত হওয়ার জন্যই সুফিদের কান্তিহীন অবিরাম পথচলা অত্যাবশ্যক। সে পথটির নামই হলো তরিকত। সে তরিকার অন্যতম হলো মহান জাহাঁগীরিয়া তরিকা। দেশ বিদেশে আমাদের মহান মুরশিদগন ২০০ শত বছরের অধিক সময় ধরে এই তরিকা বিকাশের জন্য পবিত্র এই চর্চার মাধ্যমে মানুষকে মুক্তির পথ দেখাচ্ছে। আনজুমানে শাহসুফি জাঁহাগীরিয়া মমতাজিয়া ট্রাস্টের এটি একটি মহত আয়োজন। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় এ দরবারের মাধ্যমে খানাকা গুলোতে শুদ্ধ চর্চায় এই তরিকার দায়িত্ব পালিত হচ্ছে। আমরা মনে করি হানাহানির পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্টায় সুফিবাদের প্রচার প্রসার খুবই জরুরী। বক্তারা আরো বলেছেন, তরিকতের সাত মনজিল বা মোকাম রয়েছে। এই সপ্তধাপ অতিক্রম করতে হলে তাদের মুখোমুখি হতে হয় আরও দশটি হাল বা অবস্থার। কঠিন খোদা প্রেম ও রাসুল ( সা:) প্রেম। কোনো একজন সুফি যদি এসবের প্রতিটি মনজিলে অবস্থান করে সাধনার অভিজ্ঞতা অর্জন না করে এবং প্রতিটি হালের পরীায় উত্তীর্ণ হয়ে নিজেকে পবিত্র, পরিশুদ্ধ ও পরিপূর্ণ না করে, তাহলে তার পক্ষে তরিকতের উচ্চমার্গে উপনীত হওয়া সম্ভব নয়। কনফারেন্সে সভাপতির বক্তব্যে পীরজাদা মাওলানা মোহাম্মদ মতি মিয়া মনসুর বলেছেন, ভারতীয় উপমহাদেশে সুফিবাদের আগমন, প্রভাব ও প্রসার- এ গতিরই একটি স্বাভাবিক পরিণতি। খ্রিস্ট্রীয় একাদশ শতাব্দীতে ভারতীয় উপমহাদেশে সুফিবাদ প্রবেশ করে। অবশ্য বাংলার ‘সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাস’ গ্রন্থের তথ্যমতে, আরব বণিকদের ব্যবসা সূত্রে অষ্টম শতাব্দীতেই ভারতীয় অঞ্চলে মুসলমানদের আগমন ঘটে এবং সর্বাগ্রে আসে চট্টগ্রামে। তথাপি একাদশ শতাব্দীকেই বাংলাদেশ এবং ভারতের অন্যান্য প্রদেশে সুফি মতবাদ প্রচারের যথার্থ কাল বলে বিদ্বানদের ইতিহাসে উল্লেখ করেছেন।
বাংলায় আগমনকারী সুফি-দরবেশগণ অনেক সময় অলৌকিক কেরামত দেখিয়েও এতদঞ্চলের মানুষদের মুগ্ধ ও অনুগত করেছেন। প্রাচীন ধর্ম ও সংস্কৃতির ধারক ও শাসকরা অনেকেই সহজে এদের আগমন ও ধর্ম প্রচার মেনে নিতে পারেননি। তবে শান্তির কাছে তারা পরাস্ত হয়েছেন। বস্তুত ইসলামের মূলনীতি ও প্রধান আদর্শ একত্ববাদ ও এর অন্তর্নিহিত আধ্যাত্মিক শক্তির জোরেই পৌত্তলিক নরপূজা, প্রতিমা পূজা ও অবতারবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে ও জয়লাভে সমর্থ হয়েছেন। সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা মতি মিয়া মনসুর আরো বলেছেন, ইসলামের উদার সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও অর্থনৈতিক নীতির বলেই এখানে অন্যরা ঠিকতে পারেনি। কারন শুদ্ধপ্রেমে খোদা ও রাসুল ( সা:) কে স্মরনের মাধ্যমে খোদা ডাকে সাড়া দেন। তখন দেবতার কথা মানুষ আর গ্রহন করেননি। খোদা এক রাসুল (সা:) তাঁর নবী সে কথার বিশ্বাষে মানুষ এগিয়েছে। আমাদের মহান মুরশিদ গন দরবারের মাধ্যমে সে শিা দিয়েছেন। এটি নতুন নয়। আমাদ দাদা হুজুর শাহসুফি আমজাত আলী (র.) ও বাবা হুজুর শাহসুফি মাওলানা মমতাজ আলী (র.) এই পবিত্র শিা আজ আমরা আমাদের দরবার দিয়ে যাচ্ছে। আলোকিত হচ্ছে মানুষ ও মানবতা। জয় হচ্ছে কালিমার ও ইসলামের। আসুন আমরা সকলে বিশ্ব কল্যানে মানবতার জনে সুফিবাদ ও তাদের আহবানে সাড়া দিয়। মাওলানা জালালুদ্দিন রুমি, ইবনুল আরাবি, হাফিজ শিরাজি, আবদুল হাই জাঁহাগীরি, মখলুছুর রহমান জাঁহাগীরি, হযরত শাহসুফি আমজাদ আলী জাঁহাগিরি, হযরত শাহ সুফি মমতাজ আলী জাঁহাগীরি ও আমাদের দরবারের সাজ্জাদানশীন শাহসুফি মোহাম্মদ আলী মমতাজী ( মু: জি:আ:) এর দেখানো পথে চলি। বাংলাদেশের ইসলাম ধর্ম ও মুসলিম সভ্যতার প্রকৃত মশালবাহী পতাকা হলো জাঁহাগীরিয়া তরিকার পতাকা। ইসলামের মহান আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে মানুষজনের মধ্যে সত্য ধর্ম প্রচার ও মানবতার সেবায় নিজেদের উৎসর্গ করার জন্যই আমাদের পীর-দরবেশ আরব ও মধ্য এশিয়ার দূর-দূরান্ত থেকে সুদূর বাংলায় আগমন করেন। সুফি ও ওলামায়ে কেরাম বাংলাদেশে ইসলাম প্রচারে যে ভূমিকা পালন করেন, তা বিস্ময়কর। আরব, ইয়েমেন, ইরাক, ইরান, খোরাসান, মধ্য এশিয়া ও উত্তর ভারত ও বাংলাদেশে চট্টগ্রাম এর জমিন থেকেই সুফিবাদ বিকাশ হয়েছে। আসুন আজকের আয়োজনের মাধ্যমে আমরা মানুষকে হীতাহীত শিক্ষা গ্রহনের পরামর্শের মাধ্যমে আলোকিত করি। কোরান হাদিসের আলোকে জীবন চলার, শান্তির পথের সন্ধান দিয়ে ভাগ্যবান হই ও অন্যকে ভাগ্যবান করি।
প্রেসবিজ্ঞপ্তি



ফেইসবুকে আমরা