বাংলাদেশ, , শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

স্বাস্থ্যবিধি মেনে জীবন ও অর্থনীতি উভয়ই রক্ষা করতে হবে : ডা. মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন

  প্রকাশ : ২০২০-০৬-১৩ ১৪:৪৮:১৮  

পরিস্হিতি২৪ডটকম : বর্তমানে বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাস এক অদৃশ্য শক্তির নাম। সারাবিশ্ব এই অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। এই করোনা ভাইরাস সংক্রমণ একদিকে যেমন বৈশ্বিক দুর্যোগ, তেমনি প্রতিটি দেশের জাতীয় দুর্যোগ। আমাদের দেশও এই ভয়াবহ ভাইরাসটির বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছে। মূলত চীনে গত ৩১ ডিসেম্বর এই ভাইরাসটি দ্বারা আক্রান্তের খবর আসে এবং আমাদের দেশে গত ৮ মার্চ থেকে এই রোগে আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী সারাবিশ্বের ২১৫ দেশ ও অঞ্চলের প্রায় ৭৬ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে আর মৃত্যুবরণ করেছে ৪ লাখেরও বেশি। তারপরও দিন যত বাড়ছে তত আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। দেশের ৬৪ জেলাতেই ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্তকরণ পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিদিনের শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আগের দিনের চেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে। মোট রোগীর সংখ্যা ৮১ হাজারের অধিক পেরিয়ে গেছে। আর মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়িয়েছে হাজার ছাড়িয়েছে। চলতি জুনে সংক্রমণ বাড়ার পূর্বাভাস এপ্রিলেই অনেকবার সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা অবিরাম বলে চলেছেন, বাংলাদেশ এখনো করোনাভাইরাসের সংক্রমণের সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছায়নি; সেটা আমাদের সামনে রয়েছে। তাঁরা বলছেন, পুরো মে মাস ও জুনের মধ্য সপ্তাহ আমাদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ সময়। আর এই ঝুঁকি লাঘবের ক্ষেত্রে একটি গুরুতর উভয়সংকট রয়েছে। মানুষের জীবন রক্ষা করতে হবে, একই সঙ্গে জাতীয় অর্থনীতিকেও গুরুতর বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে হবে। উভয় লক্ষ্য সাধনের জন্য প্রয়োজন অতি সূক্ষ্ম বিচার-বিবেচনা; পরিকল্পনা প্রণয়নে ও তা বাস্তবায়নে এমন ভারসাম্য নিশ্চিত করতে হবে, যাতে অর্থনীতির ক্ষতি ন্যূনতম মাত্রায় সীমাবদ্ধ রেখে মানুষের জীবন রক্ষা করা যায়। কেননা শুধু অর্থনৈতিক বিবেচনাই যেন মুখ্য হয়ে না দাঁড়ায়। অর্থনীতি রক্ষার তাগিদে তৈরি পোশাক কারখানাগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে এবং হচ্ছে। এতে ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়েছে এবং আরও বাড়বে। সেই ঝুঁকি শুধু করখানাগুলোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে না, শ্রমিকদের বাসস্থান ও লোকালয় পর্যন্ত বিস্তৃত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি প্রতিটি পোশাক কারখানার সবার মেনে চলা নিশ্চিত করা। শ্রমিকদের শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে মানসম্মত মাস্ক ও গ্লাভস পরে কাজ করতে হবে। প্রতিটি কারখানার ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে এটা নিশ্চিত করতে হবে; তাদের দায়িত্বশীলতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য কঠোর নজরদারির প্রয়োজন হবে। কোনো পক্ষেই কোনো ধরনের শৈথিল্য দেখানোর সুযোগ নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রদত্ত সারাবিশ্বে এক শ্লোগান: সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন, ঘরে থাকুন নিরাপদে থাকুন। আমাদের দেশের মানুষকে ঘরে নিরাপদে রাখতে গত ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা হয়েছে, এবং তা গত ৩০ মে পর্যন্ত বলবৎ ছিল। আর এই সাধারণ ছুটির পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার এই দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য নানান পদপে গ্রহণ করেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনর্গঠনকল্পে ব্যবসায়ীদের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। সারাদেশে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত ডাক্তারদের জন্য বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। গরীব দুঃখী মেহনতি মানুষদের জন্য স্বল্পমূল্যে চাল-ডালসহ নিত্যপণ্য বিতরণ করেছেন। আবার ৫০ লক্ষ মানুষের জন্য ঈদের খুশি উদ্যাপিত করতে মোবাইল ব্যাংকিয়ের মাধ্যমে টাকা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও গৃহহীনদের আশ্রয় নির্মাণ প্রকল্পের মাধ্যমে বাড়ি নির্মাণ প্রকল্প অব্যাহত রেখেছে এবং মসজিদ-মাদরাসার মৌলভী সাহেবদের জন্য অনুদান প্রকল্পসহ নানান পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং গৃহীত এই পদক্ষেপগুলো দেশ-বিদেশে প্রশংসনীয় হয়েছে। তার পরেও মানুষকে ঘরবন্দি রাখা যায়নি। নানান কারণে ও অজুহাতে ছুটছে মানুষ এদিক থেকে ওদিক। মূলত অস্বীকার করার উপায় নাই এই দুর্যোগের কারণে গৃহবন্দি অধিকাংশ মানুষ আজ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। রুটি রোজগার বন্ধ হয়েছে গেছে। চরম হতাশায় দিন পার করছে এবং অনিশ্চিত আগামীর প্রত্যাশায় আরও হতাশার আঁধার ঘনীভূত হচ্ছে। তারপরেও দেশের অর্থনীতির কথা মাথায় রেখে বিপর্যস্ত অর্থনীতি ঠেকাতে এবং ব্যবসায়ীদের দিকে চিন্তা রেখে ১ জুন সারা দেশে সীমিত আকারে সব ধরনের দোকানপাট, ব্যবসা-বাণিজ্য, গণ-পরিবহন, রেল-বিমানসহ সবকিছু খুলে দেওয়া সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে; কিন্তু ঐ সকল দোকানপাটগুলো খুলে দেওয়ার পর করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। কারণ, যেসব মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন, তাঁরা স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মানছেন না। যাঁরা দোকানপাট খুলেছেন, তাঁদের মধ্যেও একই প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে বলে সংবাদমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। এটি আমাদের জন্য ভয় ও উদ্বেগের বিষয়। কারণ, এমনিতে দেশে সাধারণ ছুটি চলা অবস্থায়ই সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রবণতা ঊর্ধ্বমুখী; আর বর্তমানে সাধারণ ছুটি ছাড়া ও লকডাউনমুক্ত পরিবেশে লোকজন সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব ও অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করে যথেচ্ছ চলাফেরা করলে পরিস্থিতির গুরুতর অবনতি ঘটতে পারে। তা যাতে না হয়, সে লক্ষ্যে পুলিশ বিভাগ থেকে যে ধরনের নির্দেশনা প্রদান করে হয়েছে, তা গণ-পরিবহনসহ, শপিংমল, মার্কেট, দোকানপাটের মালিক-কর্মী ও ক্রেতাসাধারণের মেনে চলা উচিত। কিন্তু তার পরেও উদ্বেগজনক চিত্র দেখতে হচ্ছে। যেমন অলিগলির দোকানপাটসহ হাটবাজার খোলা দোকানপাটগুলোতে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয় পক্ষেরই আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক প্রদত্ত নির্দেশনা মেনে চলায় গাফিলতি লক্ষ করা গেছে। শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা ও কেনাকাটা সেরে যথাসম্ভব দ্রুত ঘরে ফিরে যেতে হবেÑএমন সতর্কতার ভাব অধিকাংশ লোকের মধ্যে নাই। এছাড়াও মুখের মাস্ক থুতনিতে নামিয়ে চলাফেরা করছেন অনেকেই। গণ-পরিবহন, দোকানপাটসহ ব্যবসা-বাণিজ্য খোলার পর থেকেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে সাধারণ জনগণের শৈথিল্যের ভাব দুশ্চিন্তার বিষয় আরও একটা কারণ। করোনাভাইরাসের অতিমাত্রায় ছোঁয়াচে বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে যাঁরা যথেষ্ট সচেতন নন (তাঁদের সংখ্যা অনেক), তাঁরা যখন দেখতে পাচ্ছেন যে অনেকেই শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, ঠিকভাবে মাস্ক ব্যবহার করাসহ স্বাস্থ্যবিধির অন্য বিষয়গুলো মানছেন না, তখন তাঁদের মধ্যেও এই ক্ষতিকর প্রবণতা সংক্রমিত হতে পারে। নেতিবাচক ব্যাপারে, বিশেষত নিয়ম-বিধান অমান্য করার ক্ষেত্রে অনুকরণ-প্রবণতা আমাদের সমাজে যথেষ্ট লক্ষ করা যায়। আর স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনের বিষয় শুধু দোকানপাটের নয়; রাস্তাঘাটেও ভিড় বাড়ছে, শারীরিক দূরত্ব কমছে। বর্তমানে গণপরিবহন চলছে আর মোটর বাইকের মাধ্যমে রাইড শেয়ারিং করে যাত্রা আনানেওয়া চলছে প্রতিনিয়ত। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রতিবেদনে বিপুলসংখ্যক মানুষের সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে চলাচলের চিত্র ফুটে উঠেছে। সারা দেশের বিভিন্ন জেলাগুলো থেকে কর্মজীবী মানুষ রাজধানী ঢাকাসহ চট্টগ্রাম নগরীতে আসছেন ও যাচ্ছেন। সংক্রমণের কী বিরাট ঝুঁকি নিয়ে তাঁরা কর্মস্থলে ফিরছেন, তা ফুটে উঠেছে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে, মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ফেরিঘাটসহ চট্টগ্রামে প্রবেশের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে মানুষের গাদাগাদি ভিড়ের ছবিতে। স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনের এই চিত্র পর্যবেক্ষণ করে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে সামনের দিনগুলোতে এত বেশি সংখ্যক মানুষ কোভিড-১৯ রোগী হবেন যে তাঁদের চিকিৎসা দেওয়াসহ পুরো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সরকারের পক্ষে দুরূহ হবে। নভেল করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণের ফলে বিশ্বের বেশিরভাগ রাষ্ট্রই এখন এই করোনা ভাইরাস মহামারির মোকাবেলার ব্যস্ত। সারাবিশ্বে তৈরি হয়েছে এক ভয়ানক উদ্বেগজনক পরিস্থিতি। বিজ্ঞানে উন্নত বিশ্বের অনেক দেশেও জানে না কিভাবে এই মহামারির প্রাদুর্ভাব মোকাবেলা করা যায়। শুধু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রদত্ত গাইডলাইন অনুসরণ করছে সবাই। আর সামাজিক দূরত্ব ও জনসচেতনতা ব্যতিত এটি প্রতিরোধের আর কোনো উপায় নেই। এ তথ্য প্রযুক্তির যুগে আমরা কমবেশি সবাই অবগত হয়েছি এ করোনা বিষয়ে। এ রোগের এখনো পর্যন্ত কোনো ঔষুধ আবিষ্কৃত হয়নি। গবেষকরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারপরেও কি থেমে আছে চিকিৎসাসেবা? তাবৎ বিশ্বের চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন চিকিৎসাসেবার মাধ্যমে করোনা আক্রান্ত রোগীদের সুস্থ করে তুলতে। আর দিন দিন গবেষণা হচ্ছে এই রোগের টিকা আবিষ্কারের জন্য। ইতিমধ্যে কার্যকর টিকার সফল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে এবং তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পর্যবেক্ষণে আছে। চূড়ান্ত সফল প্রয়োগের খবর আসলেই তা বাজারজাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমতি প্রদান করবে। তখনই হয়তো এই রোগ থেকে মুক্তির একটা আশা মিলবে এবং মানুষের মাঝে স্বস্তি দেখা যাবে। আজকে সারা বিশ্বে একটা শ্লোগান “ঘরে থাকুন, নিরাপদে থাকুন”। নিজেকে বাঁচতে হবে, অন্যকেও বাঁচাতে হবে। তাই জীবিকা রক্ষায় যেন স্বাস্থ্যহানি না ঘটে। সেটা যাতে না হয়, সে জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক প্রেরিত নির্দেশনা বাস্তবায়নে উদ্যোগী হতে হবে। এ ছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি সারা দেশে সঠিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য সরকারি প্রশাসন, পুলিশ, স্থানীয় সরকার, দোকানপাট ও মার্কেটের মালিকদের সমিতি, সামাজিক-নাগরিক সংগঠন, সচেতন নাগরিক, সংবাদমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ সবাইকে তৎপর হতে হবে। সংক্রমণ বৃদ্ধির ধারা যত দিন অব্যাহত থাকছে, তত দিন আমাদের সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার নীতি অব্যাহত রাখতে হবে। প্রকৃতপক্ষে আমাদের মনে রাখা উচিত, আমরা এখনো লকডাউন (অঘোষিত) শিথিল করার উপযোগী সময়ে পৌঁছাইনি। তবুও জীবন জীবিকার তাগিদে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে বের হতে হচ্ছে, সীমিত আকারে সবকিছু খুলে দেওয়া হয়েছে। মূলত পিক সময় বা সর্বোচ্চ মাত্রায় সংক্রমিত হওয়ার সময় পেরিয়ে যখন সংক্রমণ করতে শুরু করবে, শুধু তখনই পুরোদমে সবকিছু পর্যায়ক্রমে তুলে দেওয়ার কথা বিবেচনা করা যাবে। এখন সংক্রমণ যাতে আরও ব্যাপক এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে না পারে, তা নিশ্চিত করতে অবশ্যই বিচ্ছিন্নতা ও সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করে যেতে হবে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ইতিমধ্যে খবর বেরিয়েছে, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুরসহ আরও কিছু এলাকা থেকে কিছু মানুষ দেশের বিভিন্ন জেলায় নিজেদের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার পর সেসব এলাকায় সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আর চট্টগ্রাম বর্তমানে করোনার হট জোনে পরিণত হয়েছে। সুতরাং এ ধরনের এলাকাগুলো থেকে মানুষের অন্যত্র যাওয়া কিংবা অন্য কোনো এলাকা থেকে এসব এলাকায় মানুষের প্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ করা দরকার। সে জন্য সর্বোচ্চ সংক্রমিত জেলাগুলোতে পুনরায় লকডাউন করা দরকার বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। আর যেসব জেলায় সংক্রমণের হার কম, সেগুলোতে সবকিছু শিথিল করা যেতে পারে। অর্থাৎ এলাকা বাছাই করে ভিন্ন ভিন্ন রকম পদক্ষেপের মাধ্যমে সংক্রমণের বিস্তার রোধ এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার মধ্যে সামঞ্জস্য বিধানের চেষ্টা করতে হবে। আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক প্রদত্ত গাইডলাইন অনুসরণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, আপনি নিরাপদে থাকলে নিরাপদে থাকবে এই জনপদ, দেশ ও দেশের মানুষ। আসুন নানা অজুহাতে ঘর থেকে বের না হয়ে ঘরেই থাকি, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি। আর জীবিকার সন্ধানে গিয়ে যেন জীবনকে বিপন্ন না করি।

লেখক: প্রাবন্ধিক, কলামিস্ট ও কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক-বাংলাদেশ পরিবেশ উন্নয়ন সোসাইটি (বাপউস)।



ফেইসবুকে আমরা