বাংলাদেশ, , শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

বাংলাভাষা সম্মেলনে কমরেড গুলবদন নেছা মনিকা মতিন : মৃত্যুর পরে নয় জীবিত অবস্থায় ভাষাসৈনিকদের মূল্যায়ন জরুরি

  প্রকাশ : ২০১৯-০২-২১ ২১:০৩:৩৯  

পরিস্হিতি২৪ডটকম : প্রখ্যাত ভাষাসৈনিক, ভাষামতিন খ্যাত কমরেড ড. আবদুল মতিনের সহধর্মিণী কমরেড গুলবদন নেছা মনিকা মতিন বলেছেন, মৃত্যুর পরে নয় জীবিত অবস্থায় ভাষাসৈনিকদের মূল্যায়ন জরুরি। জীবদ্দশায় তাঁদের কর্মের মূল্যালয় দেখতে চাই। ভাষা আন্দোলনে অবদান রাখা অনেক ভাষাসৈনিক আজ অবহেলিত। অথচ রাষ্ট্রীয় একুশে পদক দেওয়া হচ্ছে। ভাষাসৈনিকদের স্মৃতিজড়িত একুশে পদক জীবিত ভাষাসৈনিকদের প্রদান করা হোক। ভাষাসৈনিক রওশন-আরা বাচ্চু কি পদকের উপযুক্ত নয়? জীবিত ভাষাসৈনিকদের মধ্যে তিনি অন্যতম। এরকম বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মাতৃভাষা বাংলার জন্য অবদান রাখা সৈনিকদের মূল্যায়ন করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই। (২০ ফেব্র“য়ারি) ৮ ফাল্গুন ১৪২৫ বাংলা বুধবার সকালে বাংলাদেশ ইতিহাস চর্চা পরিষদ আয়োজিত বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদের সেমিনার কে অমর একুশে স্মরণে বাংলাভাষা সম্মেলন ১৪২৫-এ বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেছেন। বাংলাদেশ ইতিহাস চর্চা পরিষদের সভাপতি ভাষা গবেষক ড. এম এ মুক্তাদীরের সভাপতিত্বে ও ইতিহাস চর্চা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ইতিহাস গবেষক সোহেল মো. ফখরুদ-দীনের পরিচালনায় এই সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট কবি ও মুক্তিযোদ্ধা এম এ সাত্তার। প্রধান আলোচক ছিলেন জাতীয় ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ও লেখক দুলাল কান্তি বড়ুয়া। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ভাষা আন্দোলন জাদুঘরের মহাপরিচালক ভাষাবিজ্ঞানী অধ্যাপক এম আর মাহবুব। বাংলাভাষা সম্মেলনে পাঁচজন ভাষাসৈনিক, যথাক্রমে ভাষাসৈনিক রেজাউল করিম, ভাষাসৈনিক আবদুল করিম পাঠান, ভাষাসৈনিক মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, ভাষাসৈনিক খলিল কাজী ওবিই, ভাষাসৈনিক সুব্রত বারুরী। সম্মেলনের আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ভারতবর্ষের প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ড. দেবব্রত দেবরায়, কমরেড গুলবদন নেছা মনিকা মতিন, আগরতলা ত্রিপুরার ঐতিহাসিক ড. আশিস কুমার বৈদ্য, রবীন্দ্রসঙ্গীতশিল্পী শর্নিমা রায়, পশ্চিমবঙ্গ ভারতের প্রখ্যাত নাট্যজন ও ইতিহাসবিদ জয়ন্ত রসিক, সাংবাদিক বদরুদ্দোজা হারুন, কবি শেখ আবদুল মান্নান, কবি সবিতা বেগম, কবি ও ভাষা সংগঠক তারকনাথ দত্ত, বাচিকশিল্পী শ্রাবণী কুণ্ডু, বাচিকশিল্পী সর্বাণী চট্টোপাধ্যায়, অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইউনুছ কুতুবী, চারুশিল্পী কবির উদ্দিন, অধ্যাপক রিপন চক্রবর্তী, কবি শিউলি, ভাষা গবেষক নাজমুল হাসান, মোস্তাক আহমদ ভাসানী, কবি মাসুদ আহমদ রানা, উদয়ন বড়ুয়া ঝন্টু, লায়ন ডা. বরুণ কুমার আচার্য বলাই, শেখ আবদুল মান্নান, এস এম ফরিদুল হক মুকুল, মোহাম্মদ রিয়াদ খান, ইঞ্জিনিয়ার শরীফ মোহাম্মদ মাসুম, মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ, ছোটগল্পকার কাজী এনায়েত উল্লাহ, অনুকর বড়ুয়া, সফিকুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ। সম্মেলনে বক্তারা আরো বলেছেন, মাতৃভাষা বাংলার জন্য পৃথিবীতে বাঙালিরাই একমাত্র জাতি যারা মায়ের প্রিয়ভাষার রার জন্য রাজপথে রক্ত দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। জান্তা পাকিস্তানিদের অস্ত্রের বিরুদ্ধে নিরস্ত্র বাঙালি মায়ের দামাল ছেলেরা কালো রাজপথকে রক্ত দিয়ে লাল করেছে, তবুও প্রিয় মায়ের বাংলা ভাষা কেড়ে নিতে দেন নি। বাঙালি জাতি হিসেবে এর চাইতে গর্বের আর কি হতে পারে? বক্তারা আরো বলেন, দুঃখের বিষয় হলেও সত্য যে, আজকে বাংলা ভাষাকে নিয়ে বাঙালির ছেলেরাই কটা করছে। এটি শুধু দুঃখজনক নয়, লজ্জারও বটে। আমাদের উচিত প্রত্যেক মাতৃভাষাকে স্ব স্ব অবস্থানে সম্মানের সহিত মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করা। আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মায়ের ভাষাকে মর্যাদার সহিত প্রাধান্য দিতে হবে। বাংলা সাহিত্যকে মর্যাদা ও শ্রীবৃদ্ধির জন্য বাংলা মায়ের প্রকৃত ভাষাকে আরো সুন্দরভাবে এই প্রজন্মের কাজে তুলে ধরতে হবে। সম্মেলনে বক্তারা আরো বলেছেন, বায়ান্নের ভাষা আন্দোলনের সূত্র ধরে বাংলার স্বাধীনতা। বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহান ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালিকে বিশ্ব দরবারে মর্যাদা দান করেছেন। আমাদের এই বাংলা ভাষায় সাহিত্য সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিতে কবি সাহিত্যিকদের নিরলস পরিশ্রম ও ভূমিকা রাখতে হবে। বাংলাভাষা সম্মেলনে বাংলাদেশের বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ, ইতিহাস গবেষক, ভাষাসৈনিক ও ভারতের আগরতলা, ত্রিপুরা, আসাম ও পশ্চিমবঙ্গ থেকে আগত ২৫ ইতিহাসবিদদের সম্মান ও মানপত্র প্রদান করা হয়।



ফেইসবুকে আমরা