চন্দনাইশের ইতিহাস বিষয়ক গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তারা :
প্রাচীন সুহ্ম রাজ্যের আঞ্চলিক রাজধানী ছিলো কাঞ্চনগর-দোহাজারী
পরিস্হিতি২৪ডটকম : চন্দনাইশ একটি প্রাচীন সমৃদ্ধ ইতিহাসের ঐতিহাসিক স্থান। হাজার হাজার বছরের গৌরবোজ্জ্বল প্রাচীন চন্দনাইশের ইতিহাস-ঐতিহ্য বর্তমান প্রজন্মকে জানানো ও ইতিহাস সচেতনতায় চর্চা বাড়িয়ে আগ্রহী করে গড়ে তুলার আহ্বান করা হয়। আজ (১০ অক্টোবর ২০২০) শনিবার বিকাল ৩ ঘটিকা চট্টগ্রাম নগরীর একটি রেস্তোরাঁয় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ইতিহাসবেত্তা সোহেল মো. ফখরুদ-দীন রচিত চন্দনাইশের ইতিহাস গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। বিশিষ্ট পরিবেশবিদ ও গণমাধ্যমকর্মী, লেখক এ কে এম আবু ইউসুফের সভাপতিত্বে এই সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চন্দনাইশ উন্নয়ন ও সমাজকল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক, প্রিমিয়ার হসপিটাল লিমিটেডের জিএম আবু বক্কর। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন গ্রন্থটির লেখক ইতিহাসবেত্তা সোহেল মো. ফখরুদ-দীন, অনুতোষ দত্ত বাবু, নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক দিদারুল আলম, অ্যাডভোকেট মনজুরুল আলম চৌধুরী, রাজীব চক্রবর্তী, ডা. মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন প্রমুখ। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনাব আবু বক্কর বলেছেন, প্রাচীন চন্দনাইশের ইতিহাস সুহ্ম রাজ্যের আঞ্চলিক রাজধানী ছিল কাঞ্চনগর বা দোহাজারী, মহোঞ্জদারো-হরপ্পার মতো চন্দনাইশ একটি সুপ্রাচীন ভূখণ্ড, বারো হাজার বছর আগে চন্দনাইশে নব্যপ্রস্তর সভ্যতা গড়ে উঠেছে, চামুদরিয়া একটি বিলীন সমুদ্রের নাম। তিনি আরো বলেছেন, আজকের চন্দনাইশ একটি প্রাচীন জনপদ। সময়ের সাথে সাথে এই জনপদে শাসন, রাজনীতি-সমাজনীতি পরিবর্তন হয়ে আজকের বাংলাদেশের চন্দনাইশ। কখনো মগ, কখনো হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলমান দ্বারা শাসিত হয়েছিলো। আরাকান, বৃটিশ, মোগল, সুলতান, পাকিস্তানও শাসন করেছে এ অঞ্চলকে। এই ইতিহাস অনেক প্রাচীন। বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও চন্দনাইশের বিভিন্ন এলাকায় প্রাচীন বৌদ্ধ বিহারের ধ্বংসাবশেষ, প্রাচীন মন্দির, ইটের প্রকৃতি ইত্যাদি প্রমাণ করে যে, অতি প্রাচীনকাল হতে চন্দনাইশ এলাকায় বৌদ্ধ সভ্যতা ও কৃষ্টি গড়ে উঠেছিল। সভাপতির বক্তব্যে এ কে এম আবু ইউসুফ বলেন, ১৫৩৮ খ্রিষ্টাব্দে পর্তুগিজ ঐতিহাসিক জ্যো আ দ্যা বেরোস অঙ্কিত বাংলার ম্যাপ এবং তুর্কি নাবিক সিদি আলী চিলভীর বর্ণনানুসারে দেখা যায়, “এক সময় বর্তমান চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর দণি প্রান্তের শেষ এলাকা হতে শুরু করে রামু ও কক্সবাজার সদর সহ পুরো এলাকাটি অখণ্ড রাজ্য ছিল। এবং চন্দনাইশ ছিল প্রাচীন সুহ্ম রাজ্যের আঞ্চলিক রাজধানী। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে চন্দনাইশের কৃতী বীরসন্তানদের ভূমিকা অপরিসীম। ভারতীয় উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের শুরুর দিকে চন্দনাইশের কৃতিপুরুষ হাবিলদার রজব আলীর সিপাহী বিদ্রোহ, বৃটিশ আন্দোলনে যাত্রামোহন সেনগুপ্ত, যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত, নেলী সেনগুপ্ত, মাওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী, মাওলানা আবদুল হামিদ ফখরে বাংলা, বিপ্লবী মহেষচন্দ্র বড়ুয়া, কবিয়াল করিম বখসু, ভাষা আন্দোলনের স্থপতি অধ্য আবুল কাসেম, অধ্যাপক সোলায়মান আলম, সাহিত্যক আহমদ ছফা, জাতীয় অধ্যাপক ডা. নুরুল ইসলাম এর অবদান স্মরণীয়। বক্তারা চন্দনাইশের উন্নয়নের জনপদ হিসেবে গড়ে তুলতে প্রাক্তন মন্ত্রী কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম ও বর্তমান সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নজরুল ইসলামের অবদানের কথা স্মরণ করেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি