বাংলাদেশ, , বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

কাশফুলের নরম ছোঁয়ায় প্রাণমুগ্ধ চর-দ্বীপচর !

  প্রকাশ : ২০১৯-১০-০৭ ১৭:৫৪:২৮  

পরিস্হিতি২৪ডটকম/(মির-হোসেন সরকার) : ভাদ্র ও আশ্বিন মাস নিয়ে আমাদের তৃতীয় ঋতু শরৎকাল। আগষ্টের মাঝে থেকে শুরু করে অক্টোবর পর্যন্ত চলে শরৎকালের পথচলা। নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলায় প্রাণমুগ্ধ প্রকৃতিতে আগমন ঘটে শরৎকালের। নদীর কিনার ঘেঁষে কাশগুচ্ছে মৃদু হাওয়ার দোলা। মাথার ওপর নীল আকাশে পেঁজা তুলোর মতো ভেসে বেড়ানো সাদা মেঘ কিংবা শিউলিতলায় ফুলের গল্পব্দমাখা স্নিগ্ধ ভোর— ইট-কংক্রিটের নাগরিক জীবনে শরতের এ রূপ দেখা এখন কল্পনায়ও আসে না। তারপরও প্রকৃতির নিয়মে ঝকঝকে নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা জানিয়ে দেয় শরৎকাল এটা।

তাইতো কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ প্রিয় শরৎকে স্বাগত জানিয়ে লিখেছিলেন, ‘আমরা বেঁধেছি কাশের গুচ্ছ, আমরা গেঁথেছি শেফালিমালা—/নবীন ধানের মঞ্জরী দিয়ে সাজিয়ে এনেছি ডালা/এসো গো শারদলক্ষ্মী, তোমার শুভ্র মেঘের রথে,/এসো নির্মল নীলপথে…’।

মেঘ-রৌদ্রের লুকোচুরির মাঝে প্রকৃতিতে যেনো এক নৈসর্গিক মুগ্ধতা ছড়িয়ে দেয় শরৎ। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শরৎকালের সেই মাধুর্য এখন আর খুঁজে পায় না মানুষ। শরৎকালের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। তবুও নগর জীবনের ব্যস্ততার মাঝেও শরৎকালের আকাশ জুড়ে সাদা মেঘের জড়াজড়ি, তুলোর মতো ভাসা ভাসা মেঘমালা নজর কাড়ে সবার। ইট পাথরের শহর থেকে দূরে গোবিন্দগঞ্জের ছোট্ট করতোয়া নদী চর-দ্বীপচরে শোভা ছড়ায় শরৎকালের।

শুধু করতোয়াই নয় শরৎকালের অন্যতম অনুষঙ্গ কাশফুলে ছেয়ে গেছে গোবিন্দগঞ্জসহ পুরো গাইবান্ধা জেলায়। যেমন, তিস্তা, ঘাঘট, মানস, আলাই ও বাঙ্গালী নদীর দুইপাড় আর চর-দ্বীপচর। বিশাল চরাঞ্চলজুড়ে সবুজের বুকে ফুটেছে কাশফুল। নীল আকাশে সাদা মেঘের সঙ্গে নদীপাড়ে সৌন কাশফুলের মেলবন্ধন কাছে টানে প্রকৃতি প্রেমীকদের। আর তাই শরৎ সঙ্গী কাশফুলের নরম ছোঁয়া নিতে এখানে প্রিয়জনদের সাথে নিয়ে বেড়াতে আসেন সৌন্দর্য-পিপাসু শহুরে মানুষ।

গোবিন্দগঞ্জ করতোয়া নদীর পাড়ে কাশফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা এক তরুণির সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘শরৎ মানেই কাশফুল, নীল আকাশ আর দিগন্তজোড়া সবুজের সমারোহ। আর কাশফুল হলো শরৎ, প্রকৃতি এবং বাংলার মানুষের এক চিরন্তন সঙ্গী। কাশফুলের সৌন্দর্য আমাদের মনের সৌন্দর্যকে সমৃদ্ধ করে। তিনি আরও বলেন, ‘শরতের এই কাশফুল আমাদের শৈশবের স্মৃতিগুলোকে স্মরণ করিয়ে দেয়। এর নিজস্ব কোনো গন্ধ নেই। তবুও বিস্ময়কর এক অনুভূতিতে কাছে টানে। কাশফুলের সৌন্দর্যের কাছে হার মেনে থাকতেই যেন স্বাচ্ছন্দ্যবোধ হয়।’

শুধু চর-দ্বীপচর, নদীর তীর নয় বিল-জলাশয়, মাঠ আর উঁচু জমিতেও শরতকালে কাশফুল ফুটতে দেখা যায়। কাশ এখানকার জনপ্রিয় ফুলের মধ্যে একটি। এটি একটি ঘাসজাতীয় উদ্ভিদ। একটি ঘাস তার ফুল দিয়ে আমাদের শিখিয়েছে কোমলতা ও সরলতা। ঋতুচক্রে স্বপ্ন ও শুভ্রতার প্রতীক হয়ে শরত আসে। দূর্বাঘাসে শিশিরের আলপনা জাগে। শরতের শান্ত প্রকৃতি, গাঢ় নীল আকাশ ও শুভ্র প্রাণের কাশফুলের নরম ছোঁয়া আমাদের ডাক দিয়ে যায়।



ফেইসবুকে আমরা