বাংলাদেশ, , বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

করোনা ভাইরাস আতঙ্কে রোহিঙ্গা ক্যাম্প

  প্রকাশ : ২০২০-০৩-১৭ ১৪:৩০:৩৪  

পরিস্হিতি২৪ডটকম : বিশ্বব্যাপী মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসে ভুগছে উখিয়া টেকনাফে আশ্রিত ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা নাগরিক। দেশি-বিদেশি এনজিও সংস্থার কর্মকর্তাদের অবাধ বিচরণ ও রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে গোপনে আসা-যাওয়ার কারণে যেকোনো মুহূর্তে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন রোহিঙ্গা নেতারা। তারা অবিলম্বে ক্যাম্পভিত্তিক করোনা ভাইরাস প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।

২০১৭ সালে ২৫ আগস্টের পর উখিয়া টেকনাফের ৩২টি ক্যাম্পে মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত প্রায় ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা এদেশে পালিয়ে আসে আশ্রয় নিয়েছেন। সরকার মানবতার খাতিরে এসব রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে ঝুপড়িঘর তৈরি করে থাকার ব্যবস্থা করেন। পাশাপাশি চিকিত্সা, ছেলে মেয়েদের পড়ালেখা, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিলেও গাদাগাদি করে বসবাসরত রোহিঙ্গারা প্রায় সময় অপরিচ্ছন্নভাবে বসবাস করে আসছেন। তারা তাদের ব্যবহৃত ময়লা ও আর্বজনাগুলো অপসারণ করছে খোলা-মেলা ও বাড়ির আশপাশে।

এ নিয়ে উখিয়ার কুতুপালং রেজিস্টার্ড ক্যাম্পের চেয়ারম্যান হাফেজ জালাল আহম্মদ জানান, বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস নিয়ে মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে অথচ গাদাগাদি করে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষার জন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। তার উপর আইএনজিও সংস্থার লোকজন বিদেশ থেকে এখনো পর্যন্ত পরিদর্শনের নামে অবাধ ক্যাম্পে আসা যাওয়া করছে। তাদের শরীরেও করোনা ভাইরাস থাকতে পারে দাবি করে ঐ রোহিঙ্গা নেতা বলেন, সোমবার ক্যাম্পে লিডারশিপ সংক্রান্ত একটি সেমিনারে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের ব্যাপারে বিষয়টি উত্তাপন করা হলে ইউএনএইচসিআর এর নেতৃবৃন্দরা দু এক দিনের মধ্যে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণে আশ্বস্ত করেছেন।

২০১২ সালে নাফ নদী পার হয়ে কুতুপালং ক্যাম্পের পাশে আশ্রয় নেন প্রায় লক্ষাধিক রোহিঙ্গা। ঐ ক্যাম্পের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুর জানান, এসব রোহিঙ্গারা করোনা ভাইরাস সম্পর্কে অজ্ঞ। এমনকি করোনা ভাইরাস থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার বিষয়টিও তারা জানে না। তারা এখনও সুযোগ বুঝে সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে মিয়ানমার ও ক্যাম্পে আসা যাওয়া করছে। যেহেতু মিয়ানমারের সাথে চীনের সীমান্ত থাকায় মিয়ানমারও করোনা ভাইরাস ঝুঁকিতে। তাই ওই ভাইরাসে আক্রান্ত রোহিঙ্গাদের কারণেও ক্যাম্পে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পরার আশঙ্কা রয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাজন বড়ুয়া বলেন, গত ১৪ দিন থেকে কোন বিদেশি যাতে ক্যাম্পে ঢুকতে না পারে সেব্যাপারে প্রশাসন তত্পর রয়েছে। তাছাড়াও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিদেশ থেকে কোনো লোক আসার সম্ভাবনা নাই। তথাপিও করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্য বিভাগ বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে।

তিনি বলেন, রামু ও চকরিয়ায় ১০০ বেডের একটি আইসোলেশন সেন্টার রয়েছে। তাছাড়া ক্যাম্পভিত্তিক যেসমস্ত ডায়েরিয়া ট্রিটমেন্ট সেন্টার রয়েছে সেগুলোকে আইসোলেশন সেন্টার হিসাবে ব্যবহার করার উপযুক্ত করে তোলা হয়েছে। ক্যাম্পে যে সমস্ত স্বাস্থ্য কর্মী রয়েছে তাদেরকে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, কোনো প্রবাসী যাতে বিদেশ থেকে এসে অবাধে বিচরণ করতে না পারে সেজন্য স্থানীয়দের সজাগ থাকার অনুরোধ জানান।



ফেইসবুকে আমরা